• মেডিক্যালের ফার্মাসিস্ট বিভাগে ওষুধ বিলির দায়িত্বে সাফাইকর্মী
    বর্তমান | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • সঞ্জিত সেনগুপ্ত, শিলিগুড়ি: চুক্তিতে নিযুক্ত ঠিকাদার সংস্থার সাফাই কর্মী ফার্মাসিস্টের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের। ফার্মাসির ডিগ্রি ছাড়া ঠিকাদার সংস্থার চার সাফাই কর্মী ফার্মাসিস্টের কাজ করছেন বলে অভিযোগ। ফার্মাসি নিয়ে পড়াশোনা না করেই তাঁরা ওষুধ  দিচ্ছেন। যা শুনে শিউরে উঠছে চিকিৎসকদের একাংশও। তাঁদের বক্তব্য, নিয়ম বিরুদ্ধ তো বটেই, ভয়ঙ্কর ঝুঁকিরও।  পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। 


    উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে গত একবছরে কয়েকজন ফার্মাসিস্ট অবসর নিয়েছেন। একজন মারা গিয়েছেন। কিন্তু, একটিও শূন্যপদ পূরণ হয়নি। অভিযোগ, ফার্মাসিস্টের অভাব পূরণ করতে নিয়মবিরুদ্ধভাবে সাফাই কর্মীদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে।  মেডিক্যাল সূত্রেই জানা গিয়েছে, কয়েক মাস আগে ওয়ার্ড মাস্টারের দায়িত্ব থেকে ঠিকাদার সংস্থার কর্মীদের  সরিয়ে দেওয়া হয়। অথচ তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে দক্ষতার সঙ্গে ওয়ার্ড মাস্টারের কাজটি করে আসছিলেন। হাসপাতাল সুপার ডাঃ সঞ্জয় মল্লিক অবশ্য তখন বলেছিলেন, স্বাস্থ্যভবনের নির্দেশেই ঠিকাদার নিযুক্ত কর্মীদের ওয়ার্ড মাস্টারের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাহলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, সাফাই কর্মীদের কীভাবে ফার্মাসিস্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে বহাল রাখা হয়েছে। 


    মেডিক্যালের এক অবসরপ্রাপ্ত ফার্মাসিস্ট বলেন, ১৭টি অনুমোদিত পদ। শুধু ওষুধ দেওয়াই নয়। স্টোরও সামলাতে হয় ফার্মাসিস্টদের। ছ’টি পদ শূন্য থাকায় ফার্মাসিস্টের অভাব রয়েছে। রোগীর চাপ প্রতিদিনই বাড়ছে। দ্রুত শূন্যপদ পূরণ করা দরকার। ডিগ্রি ছাড়া ব্যক্তিদের দিয়ে কাজ করানো নিয়মবিরুদ্ধ শুধু নয়, অত্যন্ত ঝুঁকিরও। আর সেক্ষেত্রে রোগীরাও সঙ্কটে পড়তে পারেন। ফার্মাসিস্টের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব রয়েছে। প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওষুধ দেওয়ার পাশাপাশি রোগীরা কিভাবে সেই ওষুধ খাবেন সেটাও ফার্মাসিস্টকে শিখতে হয়। এটা পড়াশোনা করেই শিখতে হয়, মুখে মুখে বলে হয় না।  অনেক ফার্মাসিস্ট কাজ না পেয়ে বসে আছেন। তাঁদেরকে চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ করলে কোনও ঝুঁকি ও বিতর্ক থাকবে না। 


    সুপার বলেন, ফার্মাসিতে আমরা ঠিকাদার সংস্থার কয়েকজন সাফাই কর্মীকে হেল্পার হিসেবে কাজে রেখেছি। তাঁরা ওষুধের কার্টন ওঠানো নামানো, ওষুধ এগিয়ে দেওয়ার কাজে ফার্মাসিস্টদের সাহায্য করেন বলেই জানি। খালাসি যেমন ড্রাইভারের সঙ্গে থাকতে থাকতে গাড়ি চালানো শিখে যান, সেরকমই। হয়তো মাঝেমধ্যে তাঁরাও ওষুধ দিচ্ছেন। তবে এখনও এনিয়ে  কোনও অভিযোগ আসেনি। আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখব।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)