• তদন্ত হবে, সিবিআইয়ের নামে ভুয়ো চিঠি, ডিজিটাল স্ক‍্যামের কবলে বাংলা
    বর্তমান | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: ডিজিটাল স্ক্যামের খপ্পরে বাংলা! কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের নামে ভুয়ো তদন্ত ও ভয় দেখানোর চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। হুগলির কোন্নগর পুরসভাকে সিবিআইয়ের নাম করে তদন্ত সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠানোর পর এই ডিজিটাল স্ক্যাম সামনে আসে। সিবিআইর লোগো সহ যাবতীয় চিহ্ন হুবহু ব্যবহার করে ওই চিঠিটি পাঠানো হয়েছে। ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, দেশের অন্যতম তদন্তকারী সংস্থার এভাবে ডিজিটাল স্ক্যামারদের কবলে পড়ার ঘটনা রীতিমতো উদ্বেগজনক। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কোনও দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ করতে পারেনি সিবিআই। এই পরিস্থিতি সিবিআইয়ের মতো সংস্থার ‘দক্ষতা’ ও ‘সুনাম’ চ্যালেঞ্জের মুখে বলে মনে করছেন অনেকে। তবে ইতিমধ্যে ডিজিটাল স্ক্যাম নিয়ে প্রচারের পরিকল্পনা করেছে সিবিআই। কোনও সংস্থা বা কর্তৃপক্ষকে তদন্তের প্রয়োজনে চিঠি বা নোটিস পাঠানোর প্রক্রিয়া উল্লেখ করে নাগরিকদের সর্তক করছে তারা। পুলিস সহ সংশ্লিষ্ট সবক’টি প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠান, এমনকী নিজেদের অধীনস্ত ইউনিটগুলিকেও সিবিআই এ বিষয়ে সতর্ক করে চিঠি দিয়েছে। তাদের তরফে জানানো হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে ডিজিটাল স্ক্যামের প্রথম নমুনা তারা কোন্নগরেই পেয়েছে। 


    ঘটনা হল, চলতি মাসের ১৭ তারিখ সিবিআইয়ের ভিজিল্যান্স বিভাগের অতিরিক্ত ডিজির নামে পাঠানো একটি চিঠি পায় কোন্নগর পুরসভা। সেই চিঠিতে কোন্নগর ও সংলগ্ন এলাকায় ঠিকাদার সিন্ডিকেটের প্রতারণা নিয়ে তদন্তের প্রয়োজনে পুরসভার কাছে কিছু তথ্য চাওয়া হয়। সিবিআইয়ের চিঠি পেয়ে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করতে শুরুও করে দেয় পুরসভা। তারপরই পুর-কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হয়। সামনে আসে ডিজিটাল স্ক্যাম। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, পুরসভাকে দেওয়া ওই চিঠিতে স্ক্যামাররা জানিয়েছিল, স্থানীয় উত্তরপাড়া থানাকেও চিঠির প্রতিলিপি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সোমবার উত্তরপাড়া থানার পুলিস দাবি করেছে, সিবিআইয়ের নামে কোনও চিঠি তারা পায়নি। এমনকী, চন্দননগর কমিশনারেটের কাছেও ঠিকাদার সিন্ডিকেট নিয়ে সিবিআই তদন্তের কোনও নথি নেই। স্বভাবতই  বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা হওয়া শুরু হয়। 


    কোন্নগর পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন দাস বলেন, ‘আমরা গত ১৭সেপ্টেম্বর সিবিআইয়ের কাছ থেকে একটি চিঠি পাই। সম্প্রতি কোন্নগরে ঠিকাদারি ব্যবসা হাতিয়ে নেওয়ার একটি চক্র সক্রিয় হয়েছিল। পুলিস সেই ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করে। সে বিষয়ে সিবিআই তদন্ত করছে বলে চিঠি দেওয়া হয়। আমাদের কাছে নথি চাওয়া হয়েছিল। ঠিকাদার সংক্রান্ত বিতর্ক তো আছেই। তাই প্রথমে আমাদের কোনও সন্দেহ হয়নি। পরে জানতে পারি, সিবিআই নিজেই ডিজিটাল স্ক্যামের শিকার হয়েছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে উত্তরপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করব।’ সিবিআইয়ের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, আগস্ট মাস থেকেই ডিজিটাল স্ক্যামারদের নিয়ে নাস্তানাবুদ হতে হচ্ছে তাদের। সংস্থার নাম করে ভুয়ো চিঠি, ভুয়ো সমন পাঠানো চলছে দেদার। ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের কারবারও চলছে। সব মিলিয়ে জেরবার সিবিআই। 
  • Link to this news (বর্তমান)