ব়্যাগিংয়ে বহিষ্কৃতদের হয়ে সওয়াল, মারধর পড়ুয়াদের
এই সময় | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
এই সময়, বরাহনগর: র্যাগিংয়ের অভিযোগে সিঁথির সরকারি পলিটেকনিক কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পাঁচ ছাত্রকে বহিষ্কার করেছিলেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে র্যাগিংয়ের অভিযোগ যাঁরা করেছিলেন, তাঁদের রবিবার রাতে তৃণমূলের পার্টি অফিসে ডেকে এনে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিবাদে সোমবার বিকেলে বিড়লা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির পড়ুয়ারা সিঁথির মোড়ে বিটি রোড অবরোধ করেন। পরে সিঁথি থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই বরাহনগর পুরসভার উপ পুরপ্রধান দিলীপ নারায়ণ বসুর সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।সিঁথির বিড়লা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি নামে সরকারি পলিটেকনিক কলেজে অগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে দ্বিতীয় বর্ষের ইলেকট্রনিক্স ও টেলিকমিউনিকেশন বিভাগের ছাত্র পীযূষ হালদারকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পাঁচ ছাত্র ও অন্য কলেজের দুই ছাত্রের নাম জড়ায়। ছাত্রছাত্রীরা কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে এ নিয়ে অভিযোগ জানান। কলেজ নিয়ামক সংস্থার কানেও বিষয়টি তোলা হয়। শেষ পর্যন্ত তদন্ত করে কলেজ কর্তৃপক্ষ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পাঁচ ছাত্রকে বহিষ্কার করেন।
এই র্যাগিং নিয়ে যে পড়ুয়ারা সবচেয়ে সরব ছিলেন, তাঁদের একজন অরিজিৎ পাল। তিনি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। আদতে বাঁকুড়ার ছেলে অরিজিৎ বরাহনগর পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের স্বাধীনপল্লিতে একটি মেসে থাকেন। ওই ওয়ার্ডেরই কাউন্সিলার বরাহনগর পুরসভার উপ পুরপ্রধান দিলীপনারায়ণ বসু।
অভিযোগ, রবিবার রাত ১১টা নাগাদ অরিজিৎকে ফোন করেন দিলীপ। রীতিমতো হুমকির সুরে তাঁকে পার্টি অফিসে আসতে বলেন। অরিজিতের কথায়, 'আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। তাই একা না গিয়ে মেস ও কলেজের কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে লোল্যান্ডের পার্টি অফিসে যাই। ওখানে আমাদের মারধর করা হয়।' অরিজিতের দাবি, দিলীপ তাঁকে হুমকি দেন যে বহিষ্কৃত টিএমসিপির পড়ুয়াদের সাত দিনের মধ্যে কলেজে ফেরাতে হবে। না হলে তাঁকেই কলেজ থেকে বের করে দেবেন। কেরিয়ার শেষ করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
অরিজিৎরা ফিরে এসে সিঁথি থানায় অভিযোগ জানাতে যান। কিন্তু পড়ুয়ারা বলেন, তাঁদের পুলিশ বরাহনগর থানায় যেতে বলে। আর থানায় না গিয়ে সোমবার কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানান পড়ুয়ারা। বিকেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবিতে কলেজের পড়ুয়ারা সিঁথির মোড়ে দীর্ঘক্ষণ বিটি রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। পরে পুলিশ এসে অবরোধ তুলে দেয়।
এ বিষয়ে দিলীপ নারায়ণ বসু বলেন, 'ভিত্তিহীন অভিযোগ। কলেজ পড়ুয়াদের মধ্যে কিছু একটা সমস্যা হয়েছিল। তা থেকে ভুল বোঝাবুঝি হয়। এ নিয়েই রবিবার রাতে ওদের নিজেদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। আমার নাম কারা কী উদ্দেশ্যে বলছে তা বুঝতে পারছি না।'