সংবাদদাতা, সিউড়ি: ফের জেলায় বৃষ্টির ভ্রূকুটিতে চিন্তায় পুজো উদ্যোক্তা থেকে মৃৎশিল্পীরা। গত কয়েকদিন আগেই আরও একটি নিম্নচাপের জেরে লাগাতার বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল বীরভূমে। সেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে না হতেই ফের বৃষ্টি। মঙ্গলবার বিকাল থেকেই ফের সিউড়িতে শুরু হয়েছে দফায় দফায় বৃষ্টি। আগামী কয়েক দিন বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। এই অবস্থায় পুজোর মুখে কীভাবে সমস্ত আয়োজন সম্পূর্ণ করা সম্ভব হবে, তাই নিয়ে চিন্তায় পুজো উদ্যোক্তা থেকে শুরু করে মৃৎশিল্পীরা। মৃৎশিল্পীদের দাবি, লাগাতার বৃষ্টি এবং মেঘলা আকাশের কারণে প্রতিমার মাটি বা রঙের কাজ শুকানোতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। সিউড়ি শহরে শিল্পীদের একাংশের অভিযোগ, তাঁদের স্থায়ী কোনও ‘কুমোরটুলি’ নেই। রাস্তার ধারে ফুটপাতে অথবা অন্যের জায়গায় প্রতিমা তৈরির কাজ করেন তাঁরা। ফলে পুজোর মুখে বানানো প্রতিমাগুলি বৃষ্টির জল থেকে রক্ষা করা তাঁদের কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ত্রিপল ও প্লাস্টিক ঢাকা দিয়ে কোনওরকমে মাটির প্রতিমাগুলি বাঁচানোর চেষ্টা করছেন তাঁরা।
অন্যদিকে, পুজো উদ্যোক্তাদের অভিযোগ, এবারও সিউড়ি, সাঁইথিয়া, দুবরাজপুর সহ একাধিক শহরে বিগ বাজেটের পুজো কমিটিগুলি থিমের আয়োজন করছে অনেকেই। এই থিমের প্যান্ডেল তৈরির কাজ জোর কদমে চলছে। কিন্তু এইভাবে দফায় দফায় নিম্নচাপের বৃষ্টি চলতে থাকলে থিমের কাজ সঠিক সময় শেষ করা একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে তাঁদের কাছে। শুধু তাই নয়, বিপুল পরিমাণ বৃষ্টির কারণে মণ্ডপ সজ্জারও ক্ষতি হচ্ছে। সাঁইথিয়ার একটি বিগ বাজেটের পুজো সাঁইথিয়া অরুণোদয় ক্লাবের সম্পাদক পিনাকীলাল দত্ত বলেন, আমাদের এবছর পুজোর থিম রাজস্থানের সোলাঙ্কি শৈলীর রূপকথা। বিভিন্ন সামগ্রী দিয়ে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। এইভাবে বৃষ্টি হলে মণ্ডপ সজ্জার কাজে কিছুটা হলেও ব্যাঘাত ঘটছে। শিল্পীরা একটানা কাজ করতে পারছেন না। ফের যদি নতুন করে নিম্নচাপ তৈরি হয় তাহলে শিল্পীদের সমস্যা বাড়বে। সিউড়ির পুলিস লাইন এলাকার এক মৃৎশিল্পী সমীর পাল বলেন, আমাদের নিজস্ব জায়গা নেই। অন্যের জায়গায় ভাড়া নিয়ে সেখানে প্রতিমা তৈরির কাজ করছি। রাস্তার দু’ধারে প্রতিমা তৈরি করা হচ্ছে। বৃষ্টি হলে চরম সমস্যায় পড়তে হয় আমাদের। কারণ এতগুলি বড় প্রতিমা রাখার জন্য জায়গা না থাকায় ত্রিপল দিয়ে কোনওরকমে ঢেকে রাখতে হয়। বৃষ্টি ও মেঘলা আকাশের কারণে প্রতিমার রঙের কাজ শুকাতে চায় না। চরম সমস্যার মধ্যে রয়েছি আমরা। জানি না, পুজোর আগে এত কম সময়ের মধ্যে কীভাবে প্রতিমার কাজ শেষ করে উদ্যোক্তাদের হাতে তুলে দেব।