স্টাফ রিপোর্টার: একটা সময় বাংলার মসলিন ছিল বড় শিল্প। ব্রিটিশরা নিজেদের বস্ত্রশিল্পকে তুলে ধরতে বাংলার মসলিনকে ধ্বংস করেছিল। শুধু মসলিন নয়, নীল শিল্পকেও ধ্বংস করেছিল ইংরেজরাই। নীলকর সাহেবদের অত্যাচারে বিরুদ্ধে ১৮৫৯ সালে নীল বিদ্রোহে নেমেছিলেন কৃষকরা। ইতিহাসের পাতায় নীল বিদ্রোহে কৃষকদের উপর ইংরেজদের সেই অত্যাচারের বর্ণনা রয়েছে। বাংলার এই দুই শিল্প এখন ইতিহাসের পাতায় বন্দি। হারিয়ে যাওয়া বাংলার এই দুই শিল্পকে ফিরিয়ে আনছে দমদম তরুণ দল।
এবার দমদম তরুণ দলের পুজোর থিম ‘সাদা-নীল’। বিলুপ্ত নীল চাষ ও মসলিন শিল্পকে তুলে ধরা হচ্ছে এই মণ্ডপে। পুজো মণ্ডপে বসে মসলিনের শাড়ি বুনবেন তন্তুজ শিল্পীরা। এবার ৪৭ বছরে পা দিয়েছে এই পুজো। গত বছর এই পুজো মণ্ডপে স্বাধীনতা আন্দোলনে বাংলার বিপ্লবী নারীদের স্মরণ করা হয়েছিল। তার আগে এই মণ্ডপে পুরনো কলকাতাকে ঘুরিয়ে দেখিয়েছিলেন এই পুজো। ইউনেসকোর পুজোর তালিকায় রয়েছে এই দমদম তরুণ দল। এবার পুজোয় নীলচাষ ও মসলিন শিল্পকে তুলে ধরছেন উদ্যোক্তরা। শিল্পী প্রদীপ দাসের হাত ধরে সেজে উঠছে মসলিনের মণ্ডপ। মসলিনের ইতিহাস তুলে ধরার পাশাপাশি মসলিনের কাজের প্রদর্শনীও চলবে।
পুজো কমিটির কোষাধ্যক্ষ প্রতীক্ষণ ঘোষ জানান, ‘বাংলার এক সময় লাভজনক শিল্প ছিল মসলিন ও নীল চাষ। ব্রিটিশরা আমাদের এই শিল্পকে ধ্বংস করেছে। এবার পুজোয় থিম ‘সাদা-নীল’-এর মাধ্যমে এই শিল্পকে তুলে ধরা হচ্ছে।’ মসলিনের বুনন শেখানো হবে মণ্ডপে। সেজন্য বর্ধমানের কাটোয়া থেকে তিন তন্তুজ শিল্পীকে নিয়ে আসা হচ্ছে, যাঁরা পুজোর কদিন মণ্ডপে বসে মসলিন বুননশৈলী দেখাবেন। মণ্ডপে মসলিনের কাজের প্রদর্শনীও দেখতে পাবেন দর্শকরা।
বিশ্বকর্মা পুজো পার হয়ে গিয়েছে । সামনে মহালয়া। জোর কদমে মণ্ডপসজ্জার কাজ চলছে। এখানে গোটা মণ্ডপটা সেজে উঠছে নীল-সাদায়। মণ্ডপসজ্জায় থাকছে মসলিন। প্রতিমায়ও থাকছে নীল-সাদার ছোঁয়া। পুজো আয়োজকদের কথায়, আর জি কর কাণ্ডের পর অনেকেই উৎসব বন্ধ রাখার কথা বলছেন। অথচ এই উৎসবের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে বহু মানুষের রুজি রুটি। তিনমাস ধরে মণ্ডপ তৈরির কাজ করে থাকেন কর্মীরা। এখান থেকে উপার্জিত অর্থ নিয়ে গেলে তাঁদের পরিবারের পুজো হয়।