সংবাদদাতা, বিষ্ণুপুর: চার চারবার বনের গাছ কাটা হলেও পাহারা দেওয়া সুরক্ষা কমিটির সদস্যরা লভ্যাংশের টাকা পাননি। পুনরায় জঙ্গলে গাছ কাটার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে দেখতে পেয়েই ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা বুধবার বিষ্ণুপুরে বনদপ্তরের অফিসে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের অভিযোগ, অন্যান্য এলাকার বনসুরক্ষা কমিটির সদস্যরা নিয়মিত টাকা পেলেও আগড়দা-কুমিরদহ বনসুরক্ষা কমিটির সদস্যরা বঞ্চিত রয়েছেন। তাই এলাকার পুরুষ ও মহিলারা একজোট হয়ে বিক্ষোভ দেখান। বনাধিকারিকরা কমিটির নামে প্যানকার্ড করানোর পরেই টাকা পেয়ে যাওয়ার আশ্বাস দেওয়ার পর তাঁরা ফিরে যান।
বনদপ্তরের বিষ্ণুপুরের রেঞ্জার আশিসকুমার ঘোষ বলেন, আমি সবে দায়িত্ব নিয়েছি। তবে তথ্য ঘেঁটে জানতে পেরেছি লভ্যাংশের টাকা সুরক্ষা কমিটির অ্যাকাউন্টে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, তাঁদের প্যান কার্ড না থাকার কারণে টাকা তোলা সম্ভব হয়নি। এদিন আন্দোলনকারীদের দ্রুত প্যান কার্ড করানোর জন্য বলা হয়েছে। প্রয়োজনে দপ্তর থেকে যাবতীয় নথি দিয়ে সাহায্য করা হবে।
আগড়দা-কুমিরদহ বনসুরক্ষা কমিটির সদস্য তথা ওন্দা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য বাবু সরখেল বলেন, ২০১৬ সালে আমরা শেষবার গাছ বিক্রির লভ্যাংশের টাকা পেয়েছিলাম। তারপর আমাদের এলাকার জঙ্গলে চারবার গাছ কাটা হয়েছে। কিন্তু, একটি টাকাও পাওয়া যায়নি। এনিয়ে বনদপ্তরে একাধিকবার অভিযোগ জানানো হয়েছে। কিন্তু, কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি। দীর্ঘদিন টাকা না পাওয়ায় সদস্যদের মনে হতাশা তৈরি হয়েছে। তাতে বন পাহারা দেওয়ার ক্ষেত্রেও ঢিলেমি হচ্ছে। সম্প্রতি বনদপ্তরের তরফে ফের গাছ কাটার জন্য মার্কিং করা হচ্ছে দেখে আমাদের টনক নড়ে। তখনই আমরা গ্রামে আলোচনা করি। এদিন সকলে মিলে দপ্তরে বিক্ষোভ দেখাই। তবে আধিকারিকরা প্যান কার্ড না থাকার কারণ টাকা পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন।
বনদপ্তর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বনদপ্তরের গাছ কাটার ক্ষেত্রে বিক্রি করা দামের উপর ৪০শতাংশ টাকা সুরক্ষা কমিটির সদস্যরা পান। বাগাখুলিয়া সহ আশেপাশের কয়েকটি মৌজায় ১০০হেক্টরেরও বেশি আয়তন জায়গায় জঙ্গল তৈরি হয়েছে। আগড়দা, কুমরাদহ ও পড়াশোল, এই তিনটি গ্রামের মোট ৩১৫জন সদস্যকে নিয়ে প্রায় এক দশক আগে সুরক্ষা কমিটি গঠন করা হয়। তাঁরা পালা করে জঙ্গলে পাহারা দেন। ২০১৬সালে শেষবার তাঁরা গাছ কাটার লভ্যাংশের টাকা পেয়েছেন।