সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাঁশদ্রোণীতে দুর্ঘটনায় ছাত্রমৃত্যুতে জারি ধরপাকড়। এই ঘটনায় ঘাতক পে লোডারের চালক এবং খালাসিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে সেকথা জানান কলকাতা পুলিশের ডিসি (সাউথ) বিদিশা কলিতা দাশগুপ্ত।
তিনি বলেন, “বাঁশদ্রোণী কাণ্ডে এখনও পর্যন্ত মোট পাঁচটি মামলা দায়ের হয়েছে। তার মধ্যে দুটি পুলিশ নিগ্রহের। বাকি তিনটি দুর্ঘটনা নিয়ে মামলা রুজু হয়েছে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১০৫ ধারায় মামলা রুজু করে পে লোডারের চালকের খোঁজ শুরু হয়। দমদম এবং চিৎপুর থেকে দুজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পে লোডার মালিক বিশ্বকর্মা শর্মা চালককে পালাতে সাহায্য করেছিল। সে কারণে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।” বিদিশা কলিতা দাশগুপ্ত আরও বলেন, “বাঁশদ্রোণীতে দুর্ঘটনার দিন পুলিশকে হেনস্তা করা হয়। ওই ঘটনাতেও আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ভিডিও ফুটেজ খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
প্রসঙ্গত, গত ২ অক্টোবর, মহালয়ার সকালে নবম শ্রেণির পড়ুয়া সৌম্য শীল সাইকেল নিয়ে পড়তে যাচ্ছিল। পিছন থেকে আসা একটি জেসিবিকে যাওয়ার জন্য রাস্তা ছেড়ে পাশে দাঁড়ায়। দীনেশ নগর অটো স্ট্যান্ডের সামনে একটি গাছের গোড়ায় দাঁড়িয়েছিল সে। পে লোডার বা জেসিবিটি যাওয়ার সময় পড়ুয়াকে ধাক্কা মারে। গুরুতর জখম অবস্থায় রাস্তাতেই লুটিয়ে পড়ে। তড়িঘড়ি তাকে উদ্ধার করা হয়। নিয়ে যাওয়া হয় বেসরকারি হাসপাতালে। নবম শ্রেণির পড়ুয়াকে মৃত বলে জানান চিকিৎসকেরা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বাঁশদ্রোণী। দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার দীর্ঘ সময় পর পুলিশ আসায় ক্ষোভ আরও চরমে ওঠে। ভাঙচুর হয় গাড়িতে। পুলিশকে আটকে রেখে চলে বিক্ষোভ। পাটুলি থানার ওসি, কলকাতা পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার ও কলকাতা পুলিশের ডিসি (সাউথ) বিদিশা কলিতা দাশগুপ্ত ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন।
এমনকী, স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বকেও মারধর করা হয়। পালিয়ে প্রাণে বাঁচেন তাঁরা। পড়ুয়া মৃত্যুর প্রতিবাদ করায় স্থানীয় বিজেপি নেত্রী রুবি মণ্ডলকে পুলিশ আটক করেছে বলেই অভিযোগ। এই ঘটনার প্রতিবাদে রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে থানা ঘেরাও করেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। ওই রাতে বেশ কিছুক্ষণ থানার বাইরে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ দেখান গেরুয়া শিবিরের লোকজন। এর পর এই ঘটনায় গ্রেপ্তারও হন বিজেপি নেত্রী রূপা। বৃহস্পতিবার জামিনে মুক্তিও পান তিনি।