খুনের কথা স্বীকার ধৃতের, ধর্ষণ নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে, জয়নগর কাণ্ডে দাবি পুলিশের
প্রতিদিন | ০৫ অক্টোবর ২০২৪
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: খুন করেছে, তবে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেনি অভিযুক্ত। জয়নগরে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীর দেহ উদ্ধারের ঘটনায় প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে একথাই জানালেন বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার পলাশচন্দ্র ঢালি। ধর্ষণ হয়েছে কিনা, তা ময়নাতদন্তের পরই স্পষ্টভাবে জানা যাবে বলে দাবি তাঁর।
পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে সকাল থেকে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গোটা এলাকা। তবে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এসপি। তিনি দাবি করেন, “মহিষমারি পুলিশ ক্যাম্প ৯টা নাগাদ খবর পায়। ওই স্কুলছাত্রী শেষবার কোথায় দেখা গিয়েছিল, কে দেখেছিলেন, সেই সংক্রান্ত তথ্য জোগাড় করা শুরু হয়। রাতেই মোস্তাকিন সর্দার নামে বছর উনিশের এক যুবককে চিহ্নিত করা হয়। সাড়ে ১২টা নাগাদ মামলা রুজুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয় অভিযুক্তকে। তাকে জেরা করা হয়। খুনের কথা স্বীকার করে নিয়েছে। তবে ধর্ষণের করা হয়েছে কিনা স্কুলছাত্রীকে, সে বিষয়ে কিছু বলেনি ধৃত।” আপাতত এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলেও দাবি এসপি-র।
প্রসঙ্গত, জয়নগরের মহিষমারির কৃপাখালির বাসিন্দা ওই চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়া। শুক্রবার দুপুরে টিউশন পড়তে বেরিয়েছিল। সন্ধে গড়িয়ে রাত হয়ে যাওয়ার পরও বাড়ি ফেরেনি সে। তাতেই দুশ্চিন্তা করতে শুরু করেন বাড়ির লোকজন। জয়নগর থানায় যান ওই স্কুলছাত্রীর বাবা। অভিযোগ, সেই সময় তাঁদের থেকে নিখোঁজ অভিযোগ নিতে কার্যত অস্বীকার করে পুলিশ। এর পর থানা থেকে ফিরে আসেন ছাত্রীর বাবা। গভীর রাতে বাড়ি থেকে ৫০০ মিটার দূরে একটি জলাজমি থেকে ছাত্রীর নিথর দেহ উদ্ধার হয়। সেই সময় তার দেহে একাধিক ক্ষতচিহ্ন পাওয়া যায় বলেই অভিযোগ। স্থানীয়দের দাবি, ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে ওই ছাত্রীকে।
এর পর খবর পেয়ে পুলিশ দেহ উদ্ধার করতে যায়। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানোর তোড়জোড় শুরু করে। ইতিমধ্যে স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পুলিশ আরও আগে তৎপর হলে স্কুলছাত্রী খুন হত না বলেই দাবি এলাকাবাসীর। পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন উত্তেজিত স্থানীয়রা। ঝাঁটা হাতে পুলিশকে ধাওয়া করেন মহিলারা। একপ্রস্থ ঝাঁটাপেটাও করা হয় পুলিশকে। বারুইপুরের এসডিপিও-কে লাঠি হাতে ধাওয়া করেন মহিলারা। জয়নগরের মহিষমারি ফাঁড়িতেও চলে ব্যাপক ভাঙচুর। ফাঁড়িতে আগুনও লাগিয়ে দেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে ওই এলাকায় যাওয়ার পর সাংসদ এবং বিধায়ককে ঘিরেও তুমুল বিক্ষোভ চলে। সব মিলিয়ে দফায় দফায় উত্তপ্ত গোটা এলাকা।