নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পুজোর আগে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা হলেও, আন্দোলন জারি থাকবে বলে জানিয়ে দিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। ফলে শহরের প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলা চত্বরে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির আশঙ্কা থাকছে পুরোদমে।
আজ শনিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ আমরণ অনশনে বসার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিলেন আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকেরা। প্রাথমিক ভাবে মোট ৬ জন চিকিৎসক এই অনশনে শামিল হচ্ছেন। তাঁদের দাবি পূরণ হলে তবেই অনশন ভাঙবেন বলে জানান জুনিয়র চিকিৎসকেরা।
তবে বিশেষ বিষয় হল, ধর্মতলায় জুনিয়র চিকিৎসকদের অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিস কিন্তু অনুমতি দেয়নি। অর্থাৎ বিনা অনুমতিতেই চলছে এই কর্মসূচি। গতকাল, শুক্রবার রাতে এই কর্মসূচির জন্য অন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের তরফ থেকে পুলিসের কাছে অনুমতি চেয়ে একটি ই-মেল করা হয়েছিল। তারই জবাবে আজ শনিবার পুলিস জানিয়েছে, পুজোর মুখে এই কর্মসূচির অনুমতি দিলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি হবে। পাশাপাশি, ধর্মতলার মতো ব্যস্ত এলাকায় এইধরনের কর্মসূচির ফলে তীব্র যানযটও সৃষ্টি হবে।
ই-মেলে আরও বলা হয়েছে, বেশিরভাগ পুজো মণ্ডপগুলিতে ঠাকুর আনার কাজ চলছে। এই কর্মসূচির ফলে তা ব্যাহত হবে। শহরজুড়ে আইন শৃঙ্ঘলার ব্যাঘাত ঘটবে।
উল্লেখ্য, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের প্রতিবাদ এবং হাসপাতালে নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছে চিকিৎসকেরা। দীর্ঘ ৫৬ দিন পর গতকাল, শুক্রবার জুনিয়র চিকিৎসকরা কর্মবিরতি পুরোপুরি প্রত্যাহার করেন। যদিও কর্মবিরতি যে প্রত্যাহার হচ্ছে, সেই ইঙ্গিত বৃহস্পতিবার দুপুরেই মিলেছিল। আন্দোলনের ভরকেন্দ্র আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের সিনিয়র চিকিৎসকরা কার্যত এক সুরে আন্দোলনকারীদের জানিয়ে দিয়েছিলেন, মানুষের কথা ভেবে তাঁদের উচিত অবিলম্বে সমস্ত পরিষেবা চালু করা। আন্দোলন চলুক, কিন্তু পরিষেবা বন্ধ রেখে নয়। আন্দোলনের রূপরেখা বদলানোর প্রয়োজন। এর আগে তাঁরা আংশিকভাবে কাজে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সেটাও শুধু ইমার্জেন্সি পরিষেবায়। কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে রোগীর বাড়ির লোকজনের সঙ্গে অশান্তির পর ফের শুরু হয় পূর্ণ কর্মবিরতি।
শুক্রবার জুনিয়র চিকিৎসকরা এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে ওয়াই চ্যানেলে পর্যন্ত মিছিল বের করেন। মিছিলটি ওয়াই চ্যানেলে পৌঁছনোর পর এক জুনিয়র চিকিৎসককে নিগ্রহ করার অভিযোগ ওঠে পুলিস বিরুদ্ধে। এই নিয়ে দু’তরফের মধ্যে বচসা শুরু হয়। ওয়াই চ্যানেলে অবস্থানে বসে পড়েন কয়েকশো জুনিয়র চিকিৎসক। এরপর তাঁরা রাজ্য সরকারকে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়ে তাঁদের ১০ দফা দাবি পূরণ করার কথা বলেন। কিন্তু এদিন সেই দাবি পূরণ না হওয়ায় আমরণ অনশনে বসলেন ৬ জুনিয়র চিকিৎসক।