আর জি কর হাসপাতালে থ্রেট কালচার, ৫৯ জনের অভিযোগই প্রমাণিত, ৪ চিকিৎসক সহ ১০ জন বহিষ্কৃত
বর্তমান | ০৬ অক্টোবর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে থ্রেট কালচারে যুক্ত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হল ৫৯ জনের বিরুদ্ধেই। শনিবার কলেজ কাউন্সিলের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এঁদের মধ্যে ডাঃ আশিস পান্ডে সহ ১০ জনকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত আর জি কর থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এই ১০ জনের মধ্যে মধ্যে চারজন চিকিৎসক, তিনজন ইন্টার্ন এবং তিনজন মেডিক্যাল পড়ুয়া। বহিষ্কৃত চিকিৎসকরা আদৌ ভবিষ্যতে ডাক্তারি করবার উপযুক্ত কিনা তার মূল্যায়ন করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলকে।
অভিযোগের গুরুত্ব বিচারে চার ধরনের শ্রেণিতে ভাগ করেছিল থ্রেট কালচারে অভিযুক্তদের। ৫৯ জনের মধ্যে ৫৩ জনকে আর জি কর-এর হস্টেল থেকে বের করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ৫৩ জনের মধ্যে যাঁদের বিরুদ্ধে র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের ক্ষেত্রে অভিযোগ পাঠানো হচ্ছে অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির কাছে। যৌন হেনস্তা বা নির্যাতনের অভিযোগের ক্ষেত্রে অভিযোগ পাঠানো হচ্ছে ইন্টারনাল কমপ্লেন কমিটির কাছে। ২৭ জনের ক্ষেত্রে পরবর্তী স্তরের কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ছাত্ররা ২টি সেমিস্টার পরীক্ষা ছাড়া বা তদন্ত কমিটির কাছে উপস্থিত হওয়া ছাড়া কলেজে আসতে পারবেন না। ইন্টার্নদের অস্থায়ীভাবে ৬ মাসের জন্য ইন্টার্নশিপ বাতিল হবে। হাউসস্টাফদের হাউসস্টাফশিপ বাতিল হবে। সার্টিফিকেটও মিলবে না। আরও ১৬ জনের ক্ষেত্রে ১টি সেমিস্টার পরীক্ষা বা তদন্ত কমিটির ডাক ছাড়া কলেজে ঢুকতে না পারা, তিন মাসের ইন্টার্নশিপ বাতিল এবং হাউসস্টাফশিপ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ৫৯ জনের মধ্যে ৬ জনকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।
সূত্রের খবর, শনিবার দিনভর থ্রেট কালচারে অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি দেওয়ার দাবিতে কলেজ বাড়িতে স্লোগান দিতে থাকেন জুনিয়র ডাক্তাররা। এদিকে কাউন্সিলের সদস্য নন, এমন বেশ কয়েকজন জুনিয়র ডাক্তার শুধু কাউন্সিল বৈঠকে ঢুকে পড়লেন, তা-ই নয়, কতজন কাউন্সিল সদস্য উপস্থিত আছেন আর কতজন নেই, কারা নেই, তা চিহ্নিত করবার জন্য তাঁরা ‘রোল কল’ পর্যন্ত করলেন। ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ বৈঠকে উপস্থিত বহু কাউন্সিল সদস্য। তাঁদের একাংশ জানান, মাস্টারমশাই হিসেব এত অপমানিত জীবনে হইনি। যাঁরা আমাদের ছাত্র, তারা আমাদের রোল কল করল! এ বিষয়ে আন্দোলনকারীদের মুখপাত্র ডাঃ অনিকেত মাহাত বলেন, আমাদের ডাকা হয়েছিল তাই গিয়েছিলাম। রোল কল হয়েছিল কি না মনে নেই। তবে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছিল। বেশ কয়েক জন কাউন্সিল সদস্য বেরিয়ে যাচ্ছিলেন, তাঁদের জানতে চাওয়া হয়, বেরিয়ে যাচ্ছেন কেন, কোনওরকম অপমান করা হয়নি।
কর্মবিরতি প্রত্যাহারের পর এদিন আর জি করকে ফের দু’মাসের আগের চেহারায় অনেকটাই দেখা গেল। শনিবার হওয়া সত্ত্বেও ২ হাজারের বেশি আউটডোর রোগী এসেছিলেন। ২ মাস বন্ধ থাকার পর এদিন আউটডোরের গেটও খুলে দেওয়া হয়।