• জয়নগর কাণ্ড: এইমসের ১১ ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে ময়নাতদন্ত, রিপোর্ট যাচ্ছে আদালতে 
    বর্তমান | ০৮ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা এবং সংবাদদাতা, কল্যাণী ও বারুইপুর: কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে জয়নগরে খুন হওয়া চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীর দেহের ময়নাতদন্ত হল কল্যাণীর জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। আদালতের নির্দেশে কল্যাণীর অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সের (এইমস) ১১ জনের চিকিৎসক দল অংশ নিয়েছিলেন ময়নাতদন্তে। মেডিক্যাল সুপার ডাঃ অজয় মল্লিকের নেতৃত্বে ময়নাতদন্তকারীদের দলে ছিলেন ফরেন্সিক, নিউরো, অর্থোপেডিক, স্কিন সহ বিভিন্ন বিভাগের বিশেষজ্ঞরা। গোটা প্রক্রিয়ার তত্ত্বাবধানে ছিলেন বারুইপুরের এসিজেএম-২ দিওয়ানি রাই। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকরা মৃতার দেহ উদ্ধার সংক্রান্ত সুরতহালনামা খতিয়ে দেখার পর কাঁটাছেড়ার প্রক্রিয়া হয়। তিনজন ব্যবচ্ছেদ করেন। পাশাপাশি, আদালতের নির্দেশে এদিনই মামলায় পকসো ধারা যুক্ত করা হয়েছে।


    কী মিলল ময়নাতদন্তের রিপোর্টে? আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সিলবন্ধ খামে জমা পড়বে আদালতে। তাই কী মিলল, তা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন ময়নাতদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, নির্যাতিতা শিশুটির দেহে কয়েকটি কামড়ের চিহ্ন মিলেছে। তবে ধর্ষণ হয়েছে কি না, সে ব্যাপারে কিছু জানা যায়নি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট নিয়ে ‘কংক্রিট’ কিছু জানার উপায় এখনই না থাকলেও, মৃতার পরিবারের এক সদস্য ইতিমধ্যেই ধর্ষণের বিষয়টি ফলাও করে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের কাছে জানাতে শুরু করেছেন। প্রচারে নেমেছে রাম-বাম দু’পক্ষই। ওই আত্মীয়ের দাবি, ময়নাতদন্তকারী এক চিকিৎসক তাঁকে এ তথ্য জুগিয়েছেন।  


    কড়া পুলিস পাহারায় এদিন সকাল ১০টা নাগাদ ওই শিশুর মৃতদেহ পৌঁছে যায় কল্যাণীর জেএনএম মেডিক্যাল কলেজে। মর্গ চত্বর পাহারায় ছিলেন শতাধিক পুলিসকর্মী। মর্গের বাইরে রাজ্য সরকার বিরোধী বিক্ষোভ ও মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে জড়ো হয়েছিল বিজেপি, সিপিএমের ছাত্র শাখা এবং আইএসএফ কর্মীরা। উপস্থিত ছিলেন কল্যাণীর বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায় এবং নদীয়া দক্ষিণ জেলার সাংগঠনিক সভাপতি বিধায়ক পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, ময়নাতদন্ত শুরুর আগে মৃতার পরিবারের সদস্যদের বিশেষ করে তার বাবাকে ভিতরে থাকার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়। তিনি রাজি হননি। তবে ভিতরে রাখা ক্যামেরার মাধ্যমে ল্যাপটপে মেয়ের দেহ তিনি শনাক্ত করার পরই শুরু হয় ময়না তদন্ত। গোটা প্রক্রিয়াটির ভিডিওগ্রাফি করা হয়েছে। পদ্মপার্টির ‘প্রত্যক্ষ’ মদতেই যে শিশুটির দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘিরে ‘রাজনীতি’ শুরু হয়েছে, তা স্পষ্ট হয়েছে মর্গ চত্বরেই। ময়নাতদন্তের পর মৃতার পরিবারের কয়েকজনকে নির্দিষ্ট করে বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে নিভৃতে আলোচনা করতেও দেখা যায়। তবে বড়সড় অশান্তি এড়াতে, ময়নাতদন্তের পর হাসপাতালের পিছনের বন্ধ থাকা একটি গেটের দরজা খুলে মৃতদেহ নিয়ে বেরিয়ে যায় পুলিস। সামনের গেটে বিক্ষোভরতরা কিছু জানতেই পারেনি।  


    অপরদিকে, শিশুটির খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে জয়নগর-কুলতলি এলাকায় ‘রাজনীতি’ এখন তুঙ্গে। পদ্মপার্টি যেমন তৎপর, তেমনই তৎপর লালপার্টিও। এরই মাঝে আসরে নেমেছে ‘ডাফলিওয়ালারা’ও। জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলন পর্বে যাঁদের দেখা মিলেছিল সল্টলেকের অবস্থান মঞ্চের আশপাশে। এদিন কুলতলির গরাণকাঠির অবরোধস্থলে এদের দেখা মিলেছে। মুখে তাঁদের ‘আগুন ঝরানো’ স্লোগান! 
  • Link to this news (বর্তমান)