নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া, আরামবাগ ও পুরুলিয়া: সোমবার বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ায় দুর্গাপুজোর কার্নিভালকে কেন্দ্র করে বাসিন্দারা উৎসবে মেতে ওঠেন। প্রথমবারের পুজো কার্নিভালকে কেন্দ্র করে বিষ্ণুপুরও ছিল উৎসবমুখর। এদিন সন্ধ্যায় বাঁকুড়া শহরে জেলার মূল কার্নিভাল শুরু হয়। জুনবেদিয়া-সতীঘাট বাইপাস রাস্তার পাশে মঞ্চ বাঁধা হয়। রাস্তায় নানা রঙের আলপনা আঁকা হয়। কার্নিভালে বাঁকুড়া শহরের পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন ব্লকের পুজো কমিটিগুলি অংশ নেয়। মঞ্চে বাঁকুড়ার সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী, জেলা পরিষদের সভাধিপতি অনুসূয়া রায়, জেলাশাসক সিয়াদ এন, পুলিস সুপার বৈভব তেওয়ারি, বাঁকুড়া পুরসভার চেয়ারম্যান অলকা সেনমজুমদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বিষ্ণুপুর শহরে প্রথমবার পুজোর কার্নিভালকে কেন্দ্র করে দর্শনার্থীদের ভিড় উপচে পড়ে। এদিন শহরের হাইস্কুল মাঠে পুজো উদ্যোক্তারা তাদের প্রতিমা লরিতে করে নিয়ে আসে। বেশ কিছু পুজো কমিটি সুসজ্জিত ট্যাবলো নিয়ে আসেন। সবমিলিয়ে মোট ২৫টি পুজো কমিটি কার্নিভালে অংশ নেয়। হাইস্কুল মাঠ থেকে কার্নিভাল শুরু হয়। তা কলেজ রোড হয়ে রসিকগঞ্জে শেষ হয়। রবীন্দ্র স্ট্যাচু মোড়ে কার্নিভাল মঞ্চ তৈরি করা হয়। সেখানে অতিথিদের সামনে উদ্যোক্তারা সংস্কৃতিক নানা কর্মসূচি পরিবেশন করেন। উপস্থিত ছিলেন বিষ্ণুপুরের মহকুমা শাসক প্রসেনজিৎ ঘোষ, বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষ, বাঁকুড়া জেলা অতিরিক্ত পুলিস সুপার মকসুদ হাসান প্রমুখ।
এদিন কার্নিভাল উপলক্ষ্যে রবীন্দ্র স্ট্যাচু মোড়ে রাস্তায় আলপনা দিয়ে সাজানো হয়। কার্নিভালের যাত্রাপথে যাতে অসুবিধা না হয় সেইজন্য কলেজ রোডে বিভিন্ন পুজো কমিটির লাগানো গেট সকালে খুলে নেওয়া হয়। ভিড় সামলাতে প্রচুর পুলিস মোতায়েন করা হয়। বিকেলে জয়পুর, পাত্রসায়র, বিষ্ণুপুর, সোনামুখী প্রভৃতি ব্লক থেকে লরিতে করে প্রতিমা নিয়ে আসা হয়। কমিটির পুরুষ ও মহিলা সদস্যরাও আসেন। উদ্যোক্তারা বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র সহযোগে নানা ধরনের অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন। বাল্যবিবাহ, পথ নিরাপত্তা সহ সচেতনতামূলক নানা বার্তা দেন। কলেজ রোডে দুই ধারে কাতারে কাতারে মানুষ দাঁড়িয়ে কার্নিভাল দেখে। অনেকে ছবিও তোলেন। এছাড়াও জায়ান্ট স্ক্রিনেও হাজার হাজার মানুষ দেখে। সবমিলিয়ে বিষ্ণুপুরে প্রথমবার পুজোর কার্নিভাল বেশ জমে ওঠে। এদিনের কার্নিভালের সেরা পুজো কমিটিকে বিষ্ণুপুর পুরসভার তরফে পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়।
পুরুলিয়া শহরে সাড়ম্বরে অনুষ্ঠিত হল পুজো কার্নিভাল। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ কার্নিভাল শুরু হয়। শহরের মানভূম ভিক্টোরিয়া ইন্সটিটিউশন স্কুল থেকে ট্যাক্সি স্ট্যান্ড পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারে কার্নিভালের আয়োজন করে জেলা প্রশাসন। মূল মঞ্চ বাঁধা হয় ট্যাক্সিস্ট্যান্ডে। কার্নিভাল দেখতে বিকেল ৪টে থেকেই রাস্তার দু’পাশে ভিড় হয়। কার্নিভালে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু, জেলাশাসক রজত নন্দা, জেলার পুলিস সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাত, পুরসভার চেয়ারম্যান নব্যেন্দু মাহালি থেকে শুরু করে জেলার বিভিন্ন পদধিকারীরা। সোমবারের কার্নিভালে মোট ন’টি পুজো কমিটি অংশগ্রহণ করেছিল। তবে, কয়েকটি পুজো কমিটি প্রতিমা ছাড়াই কার্নিভালে অংশগ্রহণ করে। ঢাক, ছৌ-নাচ, পাতা-নাচ থেকে শুরু করে বিভিন্ন আচারঅনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়েই শেষ হয় পুজো কার্নিভাল।