দশমীতে খাদিমপুরের বাসিন্দারা মাতেন ‘বলাইচণ্ডী’ রূপী মা দুর্গার আরাধনায়
বর্তমান | ১৫ অক্টোবর ২০২৪
সংবাদদাতা, কালিয়াগঞ্জ: দশভুজার বিদায়ে যখন বিষাদের ছায়া তখনই উলটো ছবি ধরা পড়ল উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জের খাদিমপুর গ্রামে। দশমীর পরে গোটা গ্রাম জুড়ে উৎসবের আমেজ। দশমীর রাতেই ‘বালাইচণ্ডী’ রূপী দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে আনন্দে মেতেছেন বাসিন্দারা। সপ্তাহব্যাপী চলবে পুজো, মেলা সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান।
রায়গঞ্জ ব্লকের কমলাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের খাদিমপুর গ্রামে চার বিঘা জমির মধ্যে প্রাচীন একটি গাছের তলায় ইটের দেওয়াল ও টিনের চাল দেওয়া একটি ছোট্ট মন্দিরে দেবীর পুজো হতো। বর্তমানে সেখানে সুদৃশ্য মন্দির তৈরি করা হয়েছে। প্রতি বছরের মতো এবারও দশমীর রাতে বালাইচণ্ডী দেবীর পুজো শুরু হয়েছে। সোমবার দিনভর পুজো চলে। রাতে বসে মেলা। পুরনো রীতি মেনে আজও এই দুর্গাপুজোয় চলে আসছে বলি প্রথা। পুজোর দিন দেবীকে সোনা ও রূপোর গয়না দিয়ে সাজানো হয়।
পুজো কমিটির সভাপতি বিশ্বনাথ বর্মন বলেন, শনিবার দশমীর রাতে দেবীর মূল পুজো হয়েছে। তবে এক সপ্তাহব্যাপী মন্দিরে পুজো ও মেলা চলবে। আর পাঁচ জন বাঙালি যেমন বছরের প্রথম থেকেই দুর্গাপুজোর প্রতীক্ষায় থাকেন ঠিক তেমনই খাদিমপুরের বাসিন্দারা দুর্গাপূজা শেষ হওয়ার অপেক্ষায় থাকেন। কারণ দশমীর দিন থেকে এই গ্রামে শুরু হয় মা বালাইচণ্ডী রূপী দুর্গার পুজো। পরিবারের মঙ্গল কামনার জন্য পুজোর দিনে খাদিমপুর গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে চলে নিরামিষ খাওয়াদাওয়া।
মন্দিরের সেবায়েত সুরেশচন্দ্র বর্মন বলেন, দেবী দুর্গা এখানে মা চণ্ডী রূপে পূজিতা হন। দুর্গার সঙ্গে এখানে মহিষাসুর থাকে না। এছাড়া দুর্গার দশ হাতের জায়গায় থাকে চণ্ডীর চার হাত। পুজো দেখতে দূরদূরান্তের মানুষ এখানে ভিড় জমান। মা বালাইচণ্ডী রূপী দুর্গার কাছে ভক্তরা নিষ্ঠার সঙ্গে পুজো দিলে মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হয় এমনই বাসিন্দাদের বিশ্বাস।
স্থানীয়রা জানান,আনুমানিক ৩০০ বছরের বেশি সময় ধরে মা বালাইচণ্ডী রূপে এখানে দেবী দুর্গার পুজো হয়ে আসছে। দশমীর দিন রাতে পুজো হয়। এরপর সারা বছর মন্দিরে মূর্তি রেখে মায়ের পুজোর্চনা চলে। এই পুজোকে কেন্দ্র করে রায়গঞ্জ ও হেমতাবাদ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়। এলাকার বাসিন্দারা একত্রিত হয়ে ঘটা করে পুজো করেন। ভক্তরা যে অর্থ মন্দিরে দান করেন তা দিয়েই দেবীর পুজো হয়। এজন্য আলাদা করে চাঁদা তোলা হয় না। সব মিলিয়ে এখন উৎসবের আমেজ খাদিমপুর গ্রামে। নিজস্ব চিত্র।