কুমোরটুলি এখন ‘কালীময়’, বারবার বৃষ্টি নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন মৃৎশিল্পীরা
বর্তমান | ২০ অক্টোবর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কুমোরটুলি এখন ‘কালীময়’। দুর্গা ও লক্ষ্মী পুজোর রেশ কাটতে না কাটতেই রাতারাতি পটুয়াপাড়ার ছবিটা বদলে গিয়েছে। শনিবার দুপুরে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, সমস্ত শিল্পীর ঘরেই জোরকদমে চলছে কালী প্রতিমা তৈরির কাজ। কোথাও পড়েছে মাটির প্রলেপ, কোথাও আবার চলছে কাঠামোর ওপর খড় বাঁধার কাজ। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে দফায় দফায় বৃষ্টি হওয়ায় মৃৎশিল্পীরা পড়েছেন বেশ দুশ্চিন্তার মধ্যে। তাঁদের বক্তব্য, বর্ষা চলে যাওয়ার ঘোষণা শুনে একটু নিশ্চিন্ত হয়েছিলাম। কিন্তু এখন যেভাবে আবার বৃষ্টি শুরু হয়েছে, তাতে প্রতিমা তৈরির কাজে বেশ সমস্যা হচ্ছে।
এদিন পটুয়াপাড়ার রবীন্দ্র সরণি, কুমোরটুলি স্ট্রিট, বনমালী সরকার স্ট্রিট সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন শিল্পীর ঘরে প্লাস্টিক বা ত্রিপল টাঙিয়ে চলছে কাজ। কুমোরটুলি মৃৎশিল্পী সংগঠনের কর্তা বাবু পাল জানান, ‘কালীপুজো আগামী ৩১ অক্টোবর। এখনও পর্যন্ত আমাদের এখানে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কালী প্রতিমার বায়না এসেছে। এখনও বায়না নেওয়া চলছে।’ এদিন মৃৎশিল্পীদের কেউ কেউ জানান, বায়নার বাইরেও ১০‑১৫টি করে অতিরিক্ত প্রতিমা তাঁরা তৈরি করে থাকেন। কারণ, অনেকেই শেষ মুহূর্তে এসে রেডিমেড প্রতিমা কিনে নিয়ে যান।
কথা হচ্ছিল মৃৎশিল্পী সমর পালের সঙ্গে। তিন কর্মচারীকে নিয়ে তিনি দিনরাত কাজ করে চলেছেন। বললেন, ‘এবার ২৭টি কালী প্রতিমার বরাত পেয়েছি। আশা করছি, আরও পাঁচ‑ছ’টি পাব।’ শিল্পী জবা পালের স্টুডিওতে দেখা গেল, দু’টি পুজো কমিটির লোকজন এসেছেন তাঁদের প্রতিমার কাজ দেখতে। তাঁদের মধ্যে মানিকতলার বাগমারির বাসিন্দা এক ব্যক্তি তাঁর কাছে চার ফুটের একটি কালী প্রতিমা বায়না দিতে এসেছেন। শিল্পী চায়না পাল জানান, এবারও তিনি কালী প্রতিমা তৈরির ভালো বরাত পেয়েছেন। কলকাতা ছাড়াও আশপাশের জেলা থেকে ‘অর্ডার’ পেয়েছেন তিনি। সব মিলিয়ে কুমোরটুলিজুড়ে এখন কালী প্রতিমা তৈরির তুমুল ব্যস্ততা।