মধ্যরাতে রাজ্য সড়কে বাইক দাঁড় করানো নিয়ে বচসা। তার জেরে স্বামীর সামনেই এক মহিলাকে হেনস্থা ও পরে গাড়ির চাকায় পিষে দিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার রাতে নদিয়ার রানাঘাট- কৃষ্ণনগর রাজ্য সড়কে। মৃতার নাম তন্দ্রা বিশ্বাস । ঘটনায় তাঁর স্বামী সুজন বিশ্বাস পরিকল্পিতভাবে স্ত্রীকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় তদন্তে নেমে ঘাতক গাড়ি চালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গভীর রাতে নদিয়ার রানাঘাট-কৃষ্ণনগর রাজ্য সড়কে এমন ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বামী সুজন বিশ্বাস নদিয়ার তাহেরপুর থানার শ্যামনগর কামগাছি এলাকার বাসিন্দা।কোতোয়ালি থানার জালালখালিতে সুজন বিশ্বাসের একটি ওষুধের দোকান রয়েছে । প্রতিদিনকার মতোই রবিবার রাতে দোকান বন্ধ করে বাইকে করে স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। তখনই খামার শিমুলিয়া এলাকা পার হতেই কুয়াশার কারণে তন্দ্রার চশমার কাচ ঘোলাটে হয়ে যায়। তখন বাইকে বসেই তিনি চশমা পরিষ্কার করছিলেন। তখন আচমকা তাঁর চশমাটি মাটিতে পড়ে যায়। তাতেই ঘটে বিপত্তি। তখন বাইক থামিয়ে রাস্তায় চশমা কুড়োতে যান দুজনে। এদিকে, সেই সময়েই একটি ইঞ্জিন ভ্যান আসে। কিন্তু, বাইক না সরানোয় সুজন ও তার স্ত্রীর সঙ্গে ইঞ্জিনভ্যান চালকের বচসা বাঁধে।
অভিযোগ, বচসা চলাকালীন ইঞ্জিনভ্যান চালক তাদের অশ্রব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। তাতে ক্রমেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে থাকে। অভিযোগ, এরপরে ইঞ্জিন ভ্যানচালক ফোন করলে একটি ছোটা হাতি ঘটনাস্থলে আসে। তখন পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অভিযোগ, ওই গাড়ির চালক স্বামী স্ত্রীকে মারধর করতে শুরু করে। অবস্থা বেগতিক বুঝে সুজন আত্মীয়দের ফোন করেন। তারা কিছুক্ষণের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছলেই ভ্যান চালক ও ছোটা হাতির চালক সেখান থেকে পালিয়ে যায়। আর এরপর পরেই ছোটা হাতি ফিরে এসে হেড লাইট বন্ধ করে তাদের ওপর চালিয়ে দেয়। সেই সময় গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হন তন্দ্রা। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
সুজনের অভিযোগ, তার স্ত্রীকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। এর বিচার চেয়ে তিনি থানার দ্বারস্থ হন। এই ঘটনায় সকালে তাহেরপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মৃতার স্বামী। প্রাথমিক তদন্তের পর অভিযোগের ভিত্তিতে একটি খুনের মামলা রুজু করে পুলিশ। এরপর ঘাতক গাড়িটি আটক করার পাশাপাশি চালক বিপুল মুস্তাফিকে গ্রেফতার করেছে। এই ঘটনার পিছনে অন্য কোনও রহস্য আছে কি না তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।