অর্ণব দাস, বারাকপুর: আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নির্যাতিতা বিচার না পেলে যারা পিছন থেকে আন্দোলন পরিচালনা করেছেন, তাদের দায় নিতে হবে। উপনির্বাচনে আবহে নৈহাটি বিধানসভার বিজেপি প্রার্থীকে সঙ্গে নিয়ে নাম না করে এমনভাবেই আক্রমণ করলেন প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ। বিচার চেয়ে রাত দখলের আন্দোলনকেও এদিন ‘লোক দেখানো’ বলে তির্যক মন্তব্য করেন তিনি।
মঙ্গলবার সন্ধেয় হালিশহর বাগমোড়ের রাসবিহারী ভবনে বারাকপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির বিজয়া সম্মেলনী অনুষ্ঠিত হয়। নৈহাটির লাগোয়া হওয়ায় উপস্থিত ছিলেন উপনির্বাচনের বিজেপি প্রার্থী রূপক মিত্র। সেখানেই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে প্রাক্তন সাংসদ দিলীপ ঘোষ বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে সরকারবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়েছে, এমন পরিস্থিতিতেই আমরা নির্বাচন লড়ব। আমরাও দেখতে চাই সাধারণ মানুষ খালি আন্দোলন করে রাত জাগছেন, নাকি সরকারের পতনের চাইছেন।” এর পরই নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে রাত দখলকারীদের উদ্দেশ্যে তাঁর কড়া মন্তব্য,”যদি উপনির্বাচনে এর (নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে আন্দোলন) প্রভাব না পড়ে, তাহলে মনে করতে হবে জনগণ লোক দেখানো জন্য এই আন্দোলন করছেন। রাজনৈতিক পরিবর্তনের জন্য নয়।”
কর্মরত অবস্থায় তরুণী চিকিৎসকের মর্মান্তিক পরিণতির ঘটনায় ন্যায় বিচারের আন্দোলন পেরিয়েছে প্রায় আড়াই মাস। তিনিও নির্যাচিতার বিচারের অপেক্ষায় আছেন, একথা জানিয়ে নাম না করে দিলীপ ঘোষের আক্রমণ, “আমরা অভয়ার বিচারের অপেক্ষায় আছি। মানুষ অনেক আশা নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন। ডাক্তাররা আন্দোলন করছেন। তার পরও যদি বিচার না হয়, তাহলে এই আন্দোলনকে যারা পিছন থেকে চালিয়েছেন, তাদের দায় নিতে হবে।” পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে চিকিৎসকদের বৈঠক ও লাইভ স্ট্রিমিং প্রসঙ্গে বিজেপি নেতার সংযোজন, “এখন মনে হচ্ছে জিনিসগুলি অনেকটা সাজানো হচ্ছে।” তবুও জনগণের আন্দোলনকে ঐতিহাসিক অরাজনৈতিক আখ্যা দিয়ে তাঁর প্রত্যাশা, “এর লাভ যেন জনতা পায়।”
উল্লেখ্য, আর জি কর আন্দোলনে দাঁত ফোটাতে পারেনি বিজেপি। প্রথম দিকে শুভেন্দু অধিকারীদের কিছুটা সক্রিয়তা দেখা গেলেও জুনিয়র ডাক্তাররা সাফ জানিয়ে দেন, “এটা অরাজনৈতিক আন্দোলন। রাজনীতির রং লাগাবেন না।” তাঁরা মুখে অরাজনৈতিক বললেও ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে যায় যে আন্দোলনের নেপথ্যে কাজ করছে বেশ কিছু অতি বাম শক্তি। তারা কার্যত হাইজ্যাক করে ডাক্তারদের আন্দোলন। সম্প্রতি উপনির্বাচনে নৈহাটি আসনটি সিপিআইএমএল-কে ছেড়েছে সিপিএম। রাজনৈতিক মহলের মতে যা এই আন্দোলনের পুরস্কার। মনে করা হচ্ছে, সেই সমীকরণ থেকেই এদিন দিলীপ নাম না করে এই আন্দোলনের মদতদাতাদের নিশানা করলেন।