১৪ হাজার উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে জট কাটল সুপ্রিম কোর্টে
বর্তমান | ২৬ অক্টোবর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: প্রাথমিক হোক বা উচ্চ-প্রাথমিক, পশ্চিমবঙ্গের স্কুলগুলিতে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় জট কাটল। প্রাথমিকের টেটে ভুল প্রশ্ন সংক্রান্ত মামলায় কোনও হস্তক্ষেপ করল না সুপ্রিম কোর্ট। আবার উচ্চ-প্রাথমিকে ১৪ হাজার ৫২টি পদে নিয়োগ আটকাতে শীর্ষ আদালতে যে মামলা দায়ের হয়েছিল, সেটিও খারিজ করে দিল দেশের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জে বি পার্দিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রর বেঞ্চ। শুক্রবার শুনানির পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের মন্তব্য, ‘২০১৬ সাল থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বারবার বাধা আসছে। তবে আর নয়। নিয়োগ প্রক্রিয়া আটকাব না।’ ফলে সরকার এবং সরকার-পোষিত স্কুলে ষষ্ঠ-অষ্টম শ্রেণি জন্য ১৪ হাজার শিক্ষক নিয়োগে কোনও বাধাই রইল না।
২০১৬ সালের স্টেট লেভেল সিলেকশন টেস্ট (এসএলএসটি)-এর মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার উদ্যোগ নেয় পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন। মেরিট লিস্ট প্রকাশ হয়ে যায়। নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্টও। কিন্তু সেটি আটকাতে সুপ্রিম কোর্টে চলে আসে মেরিট লিস্টে নাম না থাকা কয়েকজন। হাইকোর্টের নির্দেশ সংরক্ষণ নীতির বিরোধী, নিয়মে ভুল হচ্ছে ইত্যাদি দাবি করে নিয়োগ রুখতে চান আবেদনকারীদের আইনজীবী শ্যাম দিওয়ান। কিন্তু শীর্ষ আদালতে তিনি সফল হলেন না।
টেট-উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনজীবী কুণাল চট্টোপাধ্যায়রা পাল্টা হাতিয়ার করেছিলেন হাইকোর্টের নির্দেশকেই। ঘটনাচক্রে গত ২৪ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট এব্যাপারে একটি নির্দেশ দিয়েছিল। তা সত্ত্বেও মেরিট লিস্টে নাম না থাকা বেশ কয়েকজন আবেদনকারী মামলা করেন শীর্ষ আদালতে। তা দেখেই প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, ফের কেন ওই মামলা নিয়ে এসেছেন? নিয়োগ প্রক্রিয়া চলবে। আবেদন খারিজ।
উচ্চ প্রাথমিকের পাশাপাশি প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের ভাগ্যও ঝুলেছিল সুপ্রিম কোর্টে। এর আগে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ ২০২২ সালের প্রাথমিকের টেটে প্রশ্ন ভুল সংক্রান্ত মামলায় একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ার নির্দেশ দিয়েছিল। সেই কমিটিতে ছিলেন বিশ্বভারতী এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি। কিন্তু পরে ডিভিশন বেঞ্চ সেই নির্দেশ সামান্য বদলে দেয়। যাদবপুরকে বাদ রেখে বিশ্বভারতী, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের একজন প্রতিনিধি নিয়েই গড়া হয় বিশেষজ্ঞ কমিটি। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়। এদিন তার শুনানিতে কমিটির সদস্য বদলের আর্জি জানান আবেদনকারীর আইনজীবী পি এস পাটওয়ালিয়া। পাল্টা পর্ষদের আইনজীবী জয়দীপ গুপ্ত, কুণাল চট্টোপাধ্যায়রা বলেন, ‘এতে আপত্তি করার কী আছে সেটাই বোধগম্য নয়। এটা কোনও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নয়। অ্যাকাডেমিক বিষয়।’ সামান্য সওয়াল-জবাব শুনেই দেশের প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এটা নিয়ে আপত্তি করার কোনও মানে হয় না। মামলা সোজাসাপ্টা খারিজ করে দেব, নাকি প্রত্যাহার করবেন?’ চাপে পড়ে আবেদনকারীর আইনজীবী জানিয়ে দেন, আবেদন প্রত্যাহার করছি। সেই মতো সুপ্রিম কোর্টেও নির্দেশ, ‘ডিসমিস অ্যাজ উইথড্রন।’