• ‘রক্তের রাজনীতি করেছি’, মিঠুনের গলায় ষাটের দশকের নকশালপন্থী সুর!
    প্রতিদিন | ২৭ অক্টোবর ২০২৪
  • সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রবিবাসরীয় দুপুরে EZCC, সল্টলেকের পূর্বাঞ্চলীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে বিজেপির সদস্য সংগ্রহ অভিযানের সূচনা করেন অমিত শাহ। সেই অনুষ্ঠানেই উপস্থিত হয়েছিলেন বঙ্গ বিজেপির ‘স্টার সেনাপতি’ মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। মহাগুরুকে ধুতি-পাঞ্জাবিও উপহার দেন শাহ। সদ্য দাদা সাহেব ফালকে সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। এদিনের দলীয় কর্মসূচীতে সেই মুহূর্তের ঝলক দেখানোর পরই মঞ্চে ছাব্বিশে বাংলায় পরিবর্তনের ডাক দিলেন রাজনীতিক মিঠুন। তাঁর গলায় শোনা গেল ষাটের দশকের সেই চড়া নকশালপন্থী সুর!

    কলকাতার গৌরাঙ্গ চক্রবর্তীর রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয়েছিল সেই নকশাল পর্বেই। কালচক্রে পারিবারিক চাপে রাজনীতি থেকে দূরে সরে মুম্বই পাড়ি দেন। তবে বিধির লিখন! আবারও জড়িয়ে পড়েন রাজনীতির সঙ্গে। প্রথমে তৃণমূলের সঙ্গে সখ্যতা, তারপর একুশের বিধানসভার আগেই বড় চমক দেন বিজেপির ‘জাত গোখরো’। রবিবার বিজেপির সদস্য সংগ্রহ অভিযানের অনুষ্ঠানে চুয়াত্তরের মিঠুন স্মরণ করলেন সেই ২৮-এর গৌরাঙ্গকে। মঞ্চে দাঁড়িয়ে গরম সংলাপের মতো একনাগাড়ে বলে ফেললেন, “আজ অভিনেতা হিসেবে নয়, আমি সেই ষাটের দশকের মিঠুন চক্রবর্তী বলছি। আমি রক্তের রাজনীতি করেছি। তাই রাজনীতির মারপ্যাঁচ আমার কাছে নতুন নয়। জানি, কোন পদক্ষেপে কোন কাজ হবে।” প্রেক্ষাগৃহের মতো হাততালি পড়ে অনুষ্ঠানের দর্শকাসন থেকেও।

    শাহের সামনেই সভায় মন্তব্য রাখতে গিয়ে মিঠুন চক্রবর্তী বলেন, “অনেকেই আমাকে জিজ্ঞেস করেন, আমি কেন প্রথম সারিতে সক্রিয়ভাবে থাকি না? কিন্তু আজ আপনারা যদি আমাকে জোর গলায় বলেন, বিজেপির সদস্য সংখ্যা ১ কোটি হবে, তবেই আমি আপনাদের ইচ্ছেপূরণ করব। আমিও কথা দিলাম, ২৬-এ এই মসনদ আমাদের হবে। তার জন্যে যা করতে হয় করব। আগামী নির্বাচনে এই সিংহাসন আমাদের হবেই। আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সামনে বলছি- ‘কুছ ভি, মানে কুছ ভি…’- আর এই কথাটার একটা অন্তর্নিহিত অর্থ রয়েছে। গত নির্বাচনের সময়ে আমি ২৭ দিন ময়দানে নেমে প্রচার করেছি। কিন্তু বাংলায় বিজেপির ফলাফল দেখে খুব দুঃখ পেয়েছি।”

    বঙ্গে এবার ১ কোটি প্রাথমিক সদস্য করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে বিজেপি। সেই কর্মসূচী সভায় যোগ দিয়েই মিঠুন চক্রবর্তীর মন্তব্য, “নভেম্বর, ডিসেম্বর হোক বা আগামী বছরের মার্চ মাস, আমাকে দলের তরফে যেরকম নির্দেশ দেওয়া হবে, তখন থেকে ২০ দিন আমি দলের জন্য রাখব। আর বাকি ১০ দিন কাজের জন্য। কারণ কাজ না করলে খাব কী? প্রতিটা গ্রামে, জেলায় যাব। ১ কোটি সদস্য সংখ্যা হবে তো? তাহলে ২৬-এ আমরাই রাজত্ব করব। এবার শুধু আপনাদের সাহস আর সমর্থন চাই। বাকি ২৬-এর মসনদ আমাদেরই হবে।”

    বঙ্গবিজেপির অন্দরমহলে শিথিলতা নিয়ে কম জল্পনা শোনা যায়নি গত নির্বাচনে! এবার বিজেপির সদস্য সংগ্রহ অভিযানে দলের সংগঠন নিয়েও নিজস্ব মতামত পেশ করলেন মহাগুরু। তাঁর মন্তব্য, “আমাদের এরকম একজন কার্যকর্তা চাই, যাঁরা বুক চিতিয়ে সামনে এসে লড়বে। গুলি খেলেও নিজের কর্তব্যে অবিচল থাকবে। যাঁরা টাকার বিনিময়ে কাজ করেন, আমাদের ওরকম কার্যকর্তার দরকার নেই। যদি অর্থের বিনিময়ে রাজনীতি করতেই হয়, তাহলে আমি করজোড়ে অনুরোধ করছি, বিজেপিতে যোগ দেবেন না।” মিঠুনের সংযোজন, “যদি হিন্দু ভোটারদের ওঁরা ভোট না দিতে দেয়, তাহলে পরের বার আমরাও প্রস্তুতি সেরে রাখব যাতে ওঁদের ভোটাররা ভোট না দিতে পারে।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)