• চার কেজি সোনার গয়নায় সাজেন কাটোয়ার খেপি মা
    বর্তমান | ২৮ অক্টোবর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, কাটোয়া: কাটোয়ায় প্রায় চার কেজি সোনার গয়নায় সাজেন বিখ্যাত খেপি মা। কড়া পুলিস পাহারায় ব্যাঙ্কের লকার থেকে খেপিমার গয়না নিয়ে এসে পুজোর আগের রাত থেকেই পরানো শুরু হয়। অলঙ্কার পরানোর সময় মন্দিরের গর্ভগৃহে পুলিস কর্মী ও মন্দির কমিটির নির্দিষ্ট কয়েকজন ছাড়া অন্য কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। শুধু তাই নয়, পুজোর দিন থেকে পুলিস কর্মীরা মোতায়েন রাখা থাকে এই হাই প্রোফাইল মন্দির চত্বরে। 


    বহুবছর ধরেই কাটোয়া শহরের খেপি মা পূজিত হয়ে আসছেন। কে এই পুজো চালু করেছিলেন তা নিয়ে দ্বিমত থাকলেও এই পুজোর আকর্ষণ বেড়েই চলেছে। খেপি মার মূল আকর্ষণ হল তাঁর সোনার গয়না। ভক্তদের দান করা খেপি মার সোনার গয়না পরানো দেখতে মানুষের ঢল নামে মন্দির চত্বরে। তাই নিরাপত্তার জন্য গর্ভগৃহ সহ গোটা মন্দির চত্বরে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরায় মুড়ে ফেলা হয়। পার্শ্ববর্তী জেলা সহ ভিন রাজ্য থেকেও কাটোয়ার খেপি মার পুজো দিতে ভক্ত সমাগম হয় প্রতিবছর।পুজো কমিটির সম্পাদক সুজন বৈরাগ্য বলেন, এবার খেপি মাকে চার কেজি সোনা ও পাঁচ থেকে ছ’ কেজি রূপার গয়না দিয়ে সাজানো হয়। নিয়ম অনুযায়ী সবকিছু হবে। পুরসভা ও পুলিস প্রশাসন আমাদের পুজো কমিটিকে সাহায্য করে। 


    পাশাপাশি কাটোয়া শহরের আরেক হাইপ্রোফাইল পুজো ঝুপো মা। এখানে নিমগাছকেই কালীরূপে বহুকাল ধরে পুজো করে আসছেন এলাকার বাসিন্দারা। ঝুপো মায়ের মূল্যবান বেনারসি প্রতি বছর পুজোর পর পান কোনও এক দুঃস্থ কন্যাদায়গ্রস্ত পিতা। ঝুপো মায়ের বেনারসি পরেই দুঃস্থ পরিবারের যুবতীকে বিবাহ দেওয়া হয়। জনশ্রুতি আছে, বহু বছর আগে এই এলাকা ছিল ঘন জঙ্গলে ঢাকা। একদল ডাকাত এই জঙ্গলে আস্তানা গেড়েছিল। এই ডাকাত দলই ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে নিমগাছকে কালীজ্ঞানে পুজো করে ডাকাতি করতে যেত। ধীরে ধীরে এই নিমগাছই হয়ে ওঠে বাসিন্দাদের ঝুপো মা। একসময়  ঝোপ-জঙ্গলে ঘেরা নিমগাছে যেহেতু দেবী রূপে ডাকাত সর্দারদের দেখা দিয়েছিলেন সেই কারণে দেবীর নাম ঝুপো মা। আর এখন নিমগাছের চারপাশে পাঁচিল দিয়ে ঘিরে মন্দিরের মতো তৈরি করা হয়েছে। তাছাড়া এক রাতেই ঝুপো মায়ের পুজো হয় দু’বার। একবার সাড়ম্বরে পুজো করেন পুজো কমিটি। তারপর পুজো কমিটি পুজোর জায়গা পরিষ্কার করে মন্দির ছেড়ে দেন। এরপর গভীর রাতে এক সাধিকা এসে ফের নতুন করে ঘট প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করেন। কমিটির পক্ষে লক্ষ্মণচন্দ্র মণ্ডল বলেন, আমাদের ঝুপো মায়ের পুজোয় মাকে বেশ কয়েকটি দামি বেনারসি পরানো হয়। পুজোর পর ওই বেনারসি গত কয়েক বছর ধরেই কোনও এক কন্যাদায়গ্রস্ত পরিবারের হাতে আমরা তুলে দিই। 
  • Link to this news (বর্তমান)