• ‘ডানা’র বৃষ্টিপাতে ফের বন্যা পরিস্থিতি ঘাটালে 
    বর্তমান | ২৮ অক্টোবর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, ঘাটাল: ডানার প্রভাবে প্রবল বৃষ্টিপাতের জেরে ঘাটাল মহকুমার ফের বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। প্রত্যেকটি নদীর জলস্তর বাড়ছে। বহু গ্রাম ও শহরের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড প্লাবিত হতে শুরু করেছে। বহু রাস্তা ডুবে গিয়েছে। মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, ক্ষীরপাইতে শিলাবতী নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। চন্দ্রকোণা-১ ব্লকের দু’টি জায়গায় শিলাবতী নদীর বাঁধ ভেঙে বেশ কয়েকটি গ্রামে নতুন করে জল ঢুকছে বলে জানা গিয়েছে। চন্দ্রকোণা-১ ব্লকে ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। ঘাটালের মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস জানান, প্রশাসন পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে।


    শুধুমাত্র ঘাটাল মহকুমার বৃষ্টিতে বন্যার আশঙ্কা প্রায় থাকে না। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পশ্চিম অংশ এবং বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলায় বেশি বৃষ্টি হলে সেই জল দু’-একদিন পর নেমে এসে ঘাটাল মহকুমাকে প্লাবিত করে। তাই ‘ডানা’র প্রভাবে শুক্রবার প্রবল বৃষ্টি হওয়ার পর শনিবার বিকেল থেকে ঘাটাল মহকুমার বন্যা পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি হয়েছে। ঘাটাল পুরসভার চেয়ারম্যান তুহিনকান্তি বেরা জানিয়েছেন, শনিবার রাত থেকে ঘাটাল শহরের ১৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১২টি ওয়ার্ডেই জল ঢুকতে শুরু করেছে। শহরের বেশ কয়েকটি রাস্তা জলে ডুবে গিয়েছে। ঘাটাল ব্লকেরও ছ’টি পঞ্চায়েত এলাকা প্লাবিত হয়েছে।


    সেপ্টেম্বর মাসে চন্দ্রকোণা-১ ব্লকের হীরাধরপুর এবং ভবানীপুর সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়ে গিয়েছিল। সেচমন্ত্রীর নির্দেশমতো সেইসমস্ত বাঁধ যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সংস্কারের কাজও শুরু করেছিল সেচদপ্তর। শনিবার রাতে হীরাধরপুর এবং ভবানীপুরে শিলাবতীর বাঁধ ভেঙে বেশ কয়েকটি গ্রাম ফের প্লাবিত হতে শুরু করেছে। ফলে ওই এলাকায় ধানচাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। 


    দাসপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুকুমার পাত্র জানিয়েছেন, কংসাবতী নদীতেও জল বাড়ছে। ফলে সেপ্টেম্বর মাসে ভেঙে যাওয়া নদী বাঁধগুলি দিয়ে রাজনগর পঞ্চায়েত এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রাম আবার নতুন করে প্লাবিত হতে শুরু করেছে।


    শনিবার বিকেলে ঘাটাল ব্লকের মনশুকায় ঝুমি নদীর উপর বাঁশের সাঁকো জলের তোড়ে ভেঙে যাওয়ায় নদীর দু’দিকের বাসিন্দাদের পারাপারে সমস্যা হচ্ছে। যদিও ঘাটাল পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি বিকাশ কর জানিয়েছেন, সাঁকোটি ভেঙে যাওয়ার নৌকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। 


    তবে ঘাটালে কংসাবতী ও রূপনারায়ণ নদের জল বিপদসীমার অনেক নীচে রয়েছে। আর বৃষ্টি না হলে ঘাটাল মহকুমায় বন্যা নিয়ে সে অর্থে উদ্বেগের কোনও কারণ থাকবে না বলে মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, আজ, সোমবার বিকেল থেকে প্রত্যেকটি নদীতেই জলস্তর কমতে শুরু করবে।  জল জমে   ইটভাটার কাজ থমকে (উপরে)। ডুবে গিয়েছে বিস্তীর্ণ ধানজমি। রবিবার তোলা নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)