নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁর নাম জড়িয়েছিল। তাই তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই। সেই কারণে তাঁকে জেল খাটতে পর্যন্ত হয়েছিল। এবার তিনি বেরিয়ে এসেছেন জামিন পেয়ে। হ্যাঁ, তিনি বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। মে মাসে সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন পেয়ে খোলা আকাশের নিচে এসেছেন। তারপর তিনি বিধানসভাতেও গিয়ে দেখা করে এসেছেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। অথচ বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার থেকে দূরত্ব বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাই তাঁকে তৃণমূল কংগ্রেসের আর কোনও সাংগঠনিক কর্মসূচিতে ডাকা হয় না। বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চ থেকে সেটা আবার সরাসরি ঘোষণাও করছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা। যেখানে উপস্থিত ছিলেন বহরমপুরের সাংসদ ইউসুফ পাঠান।
মোবাইল ফোন পুকুরে ফেলে দিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে ছিলেন জীবনকৃষ্ণ সাহা। এবার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে বাদ রেখেই তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ ইউসুফ পাঠান–সহ অন্যান্য জেলা ও স্থানীয় নেতৃত্বকে নিয়ে বিজয়া সম্মেলনী করা হল। এতে জীবনকৃষ্ণ সাহার আঁতে ঘা লাগলেও বাস্তবে কিছু করার নেই। সোমবার বড়ঞা ব্লকের ডাকবাংলা কৃষক বাজার এলাকায় আয়োজন করা হয়েছিল বিজয়া সম্মিলনী। সেই সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন ইউসুফ পাঠান। যেখানে জায়গা হয়নি জীবনকৃষ্ণের। আবার তাঁকে কেন বাদ দেওয়া হয়েছে সেটাও জোর গলায় বলা হয়েছে। সুতরাং ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জীবনকৃষ্ণ সাহা যে টিকিট পাবেন না সেটা এই ঘটনা থেকে স্পষ্ট হয়ে গেল বলে মনে করা হচ্ছে।
জীবনকৃষ্ণ সাহাকে এখন এলাকার তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয়েও সেভাবে দেখা যায় না। তাঁকে কার্যত সাইড করে দেওয়া হয়েছে। আর এদিন মঞ্চ থেকে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা মাহে আলম বলেন, ‘রাজ্য নেতৃত্ব ও জেলা নেতৃত্বের সম্পূর্ণ নিষেধ রয়েছে। এখানের বিধায়ককে দলের কোনও সাংগঠনিক কাজে যাতে রাখা না হয়। এই বার্তা সরাসরি উপরমহলের।’ যদিও জীবনকৃষ্ণ সাহার পাল্টা সংবাদমাধ্যমে বক্তব্য, ‘দলের এই ধরণের কোনও নির্দেশ আমার জানা নেই। আমি বিজয়ী সম্মেলন মঞ্চে ডাক পাইনি। তাই যাইনি।’
এছাড়া এই বিষয়টি নিয়ে এখন জট পাকাতে শুরু করেছে। তবে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা যে কথা মঞ্চে বললেন সেটা কোনও অনুমতি ছাড়া বলা যায় না। উপরমহল বলতে কার নির্দেশে এই ঘটনা ঘটেছে সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে বহরমপুর মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান রবিউল আলম চৌধুরীর কথায়, ‘বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে দলের সমস্ত কাজ থেকে দূরে রাখতে বলেছে রাজ্য নেতৃত্ব। যদিও কারণ আমাদের জানা নেই। আর তাই এই মঞ্চে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।’