• বাংলার শিক্ষা পোর্টাল হ্যাক করে অ্যাকাউন্ট নম্বর বদল, পড়ুয়াদের ট্যাবের টাকা গায়েব, তদন্ত
    বর্তমান | ৩১ অক্টোবর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: রাজ্য সরকারের ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে ট্যাব কেনার জন্য দেওয়া ৭০ ছাত্রছাত্রীর টাকা হাতিয়ে নিল সাইবার প্রতারকরা। বাংলার শিক্ষা পোর্টাল হ্যাক করে পূর্ব মেদিনীপুরের ছাত্রছাত্রীদের অ্যাকাউন্ট নম্বর সরিয়ে নিজেদের অ্যাকাউন্ট এন্ট্রি করে দেয় হ্যাকাররা। গত ৪ অক্টোবর রাজ্য সরকার টাকা দেওয়ামাত্র ৭ লক্ষ টাকা হ্যাকারদের অ্যাকাউন্টে চলে গিয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরে ৭৮ হাজার ছাত্রছাত্রীকে ট্যাবের টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু, চারটি স্কুলের ৭০ জন পড়ুয়া ওই টাকা পায়নি। তারা স্কুলে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, তাদের বদলে প্রতারকদের বদলে দেওয়া অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকে গিয়েছে। এই ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত শুরু হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ শেষ মুহূর্তে উপভোক্তা তালিকা যাচাই করলে এই সমস্যা এড়ানো যেত বলে অনেকে মনে করছেন। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) শুভাশিস মিত্র বলেন, ‘মোট চারটি স্কুলে তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পে বেশ কয়েকজন ছাত্রছাত্রী অনুদানের টাকা পায়নি। হ্যাকাররা ওই টাকা আত্মসাৎ করেছে। ঘটনাটি রাজ্যের নজরে আনা হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে।’ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর বক্তব্য, ‘কয়েকজন বহিরাগতর অ্যাকাউন্ট নম্বর তালিকায় ঢোকানো হয়েছে। সেগুলো ইতিমধ্যেই ব্লক করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।’

    এই চারটির মধ্যে একটি চণ্ডীপুর থানার দিবাকরপুর হাইস্কুল। এখানকার ১১ জন পড়ুয়ার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সাইবার হ্যাকাররা। প্রত্যেকের অ্যাকাউন্টে ১০ হাজার টাকা ঢোকার কথা। বাংলার শিক্ষা পোর্টালে ওই ১১ ছাত্রছাত্রীর জায়গায় অন্য নাম ও অ্যাকাউন্ট নম্বর রয়েছে। বদলে যাওয়া নথিতে নাম রয়েছে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার এক বাসিন্দারও। স্কুলের প্রধান শিক্ষক চন্দন বেরা বলেন, ‘কীভাবে এটা হল বুঝতে পারছি না। সাইবার প্রতারকরা বাংলার শিক্ষা পোর্টালে ঢুকে ওই পড়ুয়াদের নাম ও অ্যাকাউন্ট নম্বর সরিয়ে নিজেদের পরিচিত লোকজনের নাম ও অ্যাকাউন্ট নম্বর এন্ট্রি করে দিয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের নামের সঙ্গে ওইসব নামের কোনও মিল নেই। তারপরও সেই অ্যাকাউন্টে কীভাবে টাকা ঢুকল, তা মাথায় আসছে না। এখন দায় আমাদের উপর চাপানো হচ্ছে। শেষ মুহূর্তে কেন লিস্ট চেক করা হয়নি, তা জানতে চাওয়া হচ্ছে।’

    চণ্ডীপুরের মুরাদপুর হাইস্কুলে আতান্তরে পড়েছে ২১ জন পড়ুয়া। তাদেরও প্রাপ্য টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সাইবার অপরাধীরা। প্রধান শিক্ষক দিলীপ মিত্র বলেন, ‘এরকম হতে পারে কল্পনাতেই ছিল না।’ মহিষাদলের নাটশাল হাইস্কুলে ২৬ জনের অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে ২ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা গায়েব করেছে প্রতারকরা। এদিন ওই স্কুলের এক শিক্ষক বলেন, ‘নকল ২৬ জন উপভোক্তার মধ্যে ২৩ জন একই ব্যাঙ্কের একটি শাখার গ্রাহক। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ওইসব অ্যাকাউন্ট ব্লক করেছে। কিন্তু তার আগেই টাকা তোলা হয়ে গিয়েছে।’ এছাড়াও নন্দকুমারের ব্যবত্তারহাট হাইস্কুলের বেশ কয়েকজন পড়ুয়া তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পে টাকা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ওই স্কুলের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে বলে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) জানিয়েছেন।
  • Link to this news (বর্তমান)