পাকা বাড়ি! সাড়ে তিন লক্ষের আবেদন খারিজ বাংলা আবাসে, সমীক্ষায় ১৬ লক্ষের মধ্যেই বাদ ২০ শতাংশ
বর্তমান | ০১ নভেম্বর ২০২৪
প্রীতেশ বসু, কলকাতা: আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির টাকা দেবে রাজ্যই। লাগাতার কেন্দ্রীয় বঞ্চনার জেরে শেষপর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ডিসেম্বর মাসেই দেওয়া হবে টাকা। তার আগে তালিকায় নাম থাকা সম্ভাব্য উপভোক্তাদের বর্তমান পরিস্থিতি সমীক্ষার মাধ্যমে যাচাই করে নিচ্ছে নবান্ন। এমনকী, প্রাথমিক তালিকা থেকে যাঁদের নাম বাদ পড়েছে, তাঁদের আবেদন পুনর্যাচাইয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মোট ১১টি কারণে বাতিল হয়েছে আবেদন। সূত্রের খবর, বুধবার বিকেল পর্যন্ত যাচাই পর্বের পরেও নাম বাদ পড়েছে প্রায় ৪ লক্ষ ১৮ হাজার ৪৪৫ জনের। আর তাঁদের মধ্যে সাড়ে তিন লক্ষেরই আবেদন বাতিলের কারণ একটাই—পাকা বাড়ি! ইটের দেওয়াল আর পাকা ছাদ থাকার জন্যই নিয়ম অনুযায়ী তাঁরা আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির টাকা পাওয়ার যোগ্য নন। কিন্তু স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টিকে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখার পক্ষপাতী। ফলে ওই আবেদনকারীরা ‘অযোগ্য’ কি না, তা ফের সমীক্ষা করা হবে। অনেক ক্ষেত্রেই কাঁচা বাড়িতে ইটের আংশিক গাঁথুনি বা ভিত থাকে। তাঁদের ছাড় দেওয়া হবে।
তবে শুধু পাকা ছাদ নয়, বাড়িতে তিন বা চার চাকার গাড়ি, তিন বা চার চাকার কৃষি সরঞ্জাম, পরিবারের কারও সরকারি চাকরি, মাসে ১৫ হাজার টাকা উপার্জন, আড়াই একরের বেশি চাষযোগ্য জমি থাকার কারণেও আবেদন বাতিল হয়েছে। এমনকী, পরিবারের কোনও সদস্য আয়কর দেন, সেই জন্যও বাদ গিয়েছে নাম। মোট ৩৬ লক্ষেরও বেশি আবেদন পুনর্যাচাই করা হবে। ৩০ অক্টোবর সেই কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’র কারণে তা সম্ভব হয়নি। তবে ৪৪ শতাংশ আবেদন ফের খতিয়ে দেখা হয়েছে। অর্থাৎ, প্রায় ১৫ লক্ষ বাড়ির সমীক্ষা শেষ। এদিন পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, ‘যাঁদের নাম বাদ পড়েছে, তাঁদের তালিকা পুনর্যাচাই করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেটা করা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই বাড়িতে দুটো ইটের পাঁচিল থাকার জন্য নাম বাদ পড়েছে। তেমনটা যাতে না হয়, অভিজ্ঞ আধিকারিকদের কাজে নামানো হয়েছে।’
বুধবার সন্ধ্যায় নবান্নে পঞ্চায়েত সচিব পি উল্গানাথানকে সঙ্গে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ও সাফ জানিয়ে ছিলেন, এই সমীক্ষায় মূলত দেখে নেওয়া হচ্ছে কেউ ইতিমধ্যে বাড়ি তৈরি করেছেন কিংবা অন্যত্র চলে গিয়েছেন বা মারা গিয়েছেন কি না। যোগ্য সকলেই বাড়ি তৈরির টাকা পাবেন। রাজ্যের স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (এসওপি) অনুযায়ী, আবেদন পুনর্যাচাইয়ের জন্য ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা ধার্য করা রয়েছে। তার মধ্যেই সমীক্ষার কাজ সম্পূর্ণ হবে বলে জানিয়েছেন পঞ্চায়েত সচিব। তারপর বোঝা যাবে, নির্দিষ্ট কতজন পাবেন বাড়ি তৈরির টাকা!