স্কুলে শূন্যপদ কত, পোর্টালের যুগেও তথ্য জোগাতে পারল না বিকাশ ভবন
বর্তমান | ০১ নভেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: রাজ্যের স্কুলগুলিতে শিক্ষকদের কত শূন্যপদ রয়েছে, তার পূর্ণাঙ্গ তথ্যই নেই বিকাশ ভবনের কাছে। সম্প্রতি এক শিক্ষকের করা আরটিআই আবেদনে উঠে এসেছে এমনই আজব তথ্য। সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের বক্তব্য, বিভিন্ন স্তরে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে জটিলতার কারণ হয়ে দাঁড়ায় এই শূন্যপদের ত্রুটিযুক্ত হিসেব। এমনকী, ট্রান্সফারের সময়ও এনিয়ে অনেক জটিলতা হয়। বাংলার শিক্ষা পোর্টাল, ইউডাইস পোর্টালের যুগেও কেন নির্দিষ্ট শূন্যপদের হিসেব থাকবে না, সেই প্রশ্ন তুলছেন তিনি।
কয়েক বছর আগে দাড়িভিট কাণ্ডও ঘটেছিল শূন্যপদ নিয়ে জটিলতার জেরে। বিক্ষোভে অংশ নিয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন দুই তরুণ। তাছাড়াও বিভিন্ন সময় শিক্ষক বদলির ক্ষেত্রেও দেখা গিয়েছে জটিলতা। এমন স্কুলে শিক্ষকদের বদলি করা হয়েছে, যেখানে সেই বিষয়ই নেই। আবার কোথাও দেখা গিয়েছে, একই পোস্টে একাধিক শিক্ষককে পাঠানো হয়েছে। নিয়োগের সময়ও কোথাও কোথাও ঘটেছে এই ভ্রান্তিবিলাস। সর্বশেষ উদাহরণ হিসেবে বলা যায় উচ্চ প্রাথমিকের জন্য এসএসসি’র ঘোষিত শূন্যপদের কথা। তাতে অজস্র ভুল থাকায় তা সংশোধন করে নতুন তালিকা প্রকাশ করতে হয়েছে। তাছাড়া অনেক সময়ই দেখা যায়, শিক্ষকদের প্রশাসনিক বদলির সময় কয়েকটি জেলা পেরিয়ে নতুন স্কুলে পাঠানো হচ্ছে। এসব মাথায় রেখেই শূন্যপদের হিসেব চেয়ে আরটিআই করেছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার এক স্কুলশিক্ষক অনিমেষ হালদার। তিনি একটি শিক্ষক সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত। শিক্ষকদের দূরবর্তী জেলায় বদলি নিয়ে তাঁর কাছে নানা অভিযোগ আসে। শূন্যপদের কারণে প্রকৃত চিত্রটা বোঝার জন্যই আরটিআই করেছিলেন বলে জানান ওই শিক্ষক।
আবেদন করা হয়েছিল শিক্ষাদপ্তরের ডেপুটি সেক্রেটারি তথা এসপিআইওর কাছে। তিনি চিঠিটি পাঠান স্কুলশিক্ষা কমিশনারের এসপিআইওর কাছে। সেখান থেকে চিঠিটি যায় গ্রান্ট-ইন-এইড সেকশনে। সেখান থেকে জানানো হয়, এরকম তথ্য হাতের কাছে প্রস্তুত নেই। এই প্রসঙ্গে শিক্ষাদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, শূন্যপদের সংখ্যা প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। আর উচ্চ প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শূন্যপদের হিসেব এক জায়গায় রাখা খুবই কঠিন কাজ। এই ‘সেনসিটিভ তথ্য’ সরকারিভাবে ভুল দেওয়া হলে অন্য বিতর্ক হয়। যদিও অনিমেষবাবুর বক্তব্য, কার কাছে এই তথ্য থাকা উচিত, আধিকারিকরাই তা নিশ্চিত নন। তাছাড়া, একটি নির্দিষ্ট দিনে শূন্যপদ কত, তা তো সহজেই বলা যেত।