• দুরারোগ্য ব্যাধি থেকে মুক্তি দেন কালী, দূরদূরান্ত থেকে হাওড়ার সিদ্ধেশ্বরীর কাছে আসেন ভক্তরা
    বর্তমান | ০১ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: হাওড়ায় তখনও নগর সভ্যতার ছোঁয়া লাগেনি। হুগলি নদীর পাশে গভীর জঙ্গলে এক তন্ত্রসাধক পুজো করতেন সিদ্ধেশ্বরী কালীর। শোনা যায়, সেখানে পুজো দিয়ে মারণ ব্যাধির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন ভূকৈলাসের রাজার ছেলে। জঙ্গল ক্রমে হারিয়ে যায়। শহর গড়ে ওঠে। কিন্তু তান্ত্রিকের সে মন্দির আজও রয়ে গিয়েছে। ওই এলাকায় গড়ে উঠেছে হাওড়ার বিখ্যাত কালীবাবুর বাজার। বাজারের কাছেই প্রায় তিনশো বছরের পুরনো সেই সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির। এখনও রোগের হাত থেকে মুক্তি পেতে পুজোর রাতে ভিড় করেন হাজার হাজার ভক্ত।

    সিদ্ধেশ্বরী কালীর নামেই এলাকার নাম সিদ্ধেশ্বরীতলা। জনশ্রুতি, কালীর স্বপ্নাদেশেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মন্দিরের। একসময় পাশ দিয়ে বয়ে যেত হুগলি নদী। তখন বহু মানুষ নৌকা করে যাওয়ার সময় মন্দিরে পুজো দিয়ে যেতেন। সে সময় অঞ্চলটি ঘন জঙ্গলে ভরা। সেই তন্ত্রসাধক পর্ণকুটির বানিয়ে কালীর নিত্য আরাধনা করতেন। ভূকৈলাশের রাজা পুত্রের আরোগ্য কামনায় হুগলি নদী ধরে বেনারসে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ স্বপ্নাদেশ পেলেন, সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরে পুজো দিলে নাকি তাঁর পুত্রসন্তান সমস্ত রোগব্যাধি থেকে মুক্তি পাবে। নৌকা থামিয়ে রাজা সিদ্ধেশ্বরী কালীর পুজো দিলেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর পুত্র সুস্থ হয়েও উঠল। কালক্রমে রানি বিরাজমোহিনী দেবীর দায়িত্বে আসে মন্দির। বর্তমানে গঙ্গোপাধ্যায় পরিবার সেবায়েতের দায়িত্ব পালন করছে।

    মন্দিরের সামনে নাটমন্দির, ভিতরে গর্ভগৃহ। সেখানে বিরাজ করেন কষ্টি পাথরের ত্রিনয়নী কালী। তিনি সোনা-রুপোর গয়নায় সজ্জিতা। বাম হস্তে রুপোর খাঁড়া। আগে মাটির মূর্তির পুজো হতো। ১৯২০ সাল নাগাদ কষ্টি পাথরের বিগ্রহ গড়ে তোলা হয়। প্রতি বছরের মতো এবারও মহাসমারোহে কালীপুজো হচ্ছে। ছাগ বলির পরিবর্তে চালকুমড়ো ও আখ বলি দেওয়া হয়। আর আমিষ অন্নভোগ নিবেদন করা হয় দেবীকে।
  • Link to this news (বর্তমান)