শনিবার সকাল থেকেই উপচে পড়ল ভিড়, কৃষ্ণনগরে জমজমাট জগদ্ধাত্রী পুজো
বর্তমান | ১০ নভেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি কৃষ্ণনগর: চন্দননগরে দুর্গাপুজোর ধাঁচেই চারদিন ধরে জগদ্ধাত্রী পুজো হয়। সেদিক দিয়ে ব্যতিক্রম কৃষ্ণনগর। জগদ্ধাত্রীর জন্মভূমি কৃষ্ণনগরে একদিনেই পুজো হয়। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীর পুজো হয়। সেইমতো আজ রবিবার কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজো। কিন্তু শনিবার সকাল থেকেই দর্শনার্থীদের ভিড় উপচে পড়ল কৃষ্ণনগরে। থিমের মণ্ডপ থেকে বারোয়ারি পুজোয় প্রতিমার তেজস্বী রূপ দেখতে কাতারে কাতারে মানুষ রাস্তায় নামলেন। কৃষ্ণনগরের বিখ্যাত বুড়িমার সাজ দেখতে উৎসবপ্রেমী জনতার ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। সকাল থেকেই বহু মানুষ চাষাড়া বারোয়ারি বুড়িমার অলঙ্কার সজ্জা দেখতে আসেন। দুপুরের পর বারোয়ারির সামনে পা রাখার জায়গা ছিল না। বিভিন্ন গয়নায় সেজে উঠছিলেন বুড়িমা। শুধু কৃষ্ণনগর নয়, জেলার বাইরে থেকেও বহু মানুষ এসেছিলেন বুড়িমা ও কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর উৎসবের আমেজ নিতে। পাশাপাশি কাঁঠালপোতা বারোয়ারির ছোট মাকেই দুপুরের দিকে অলঙ্কারে সাজানো হয়। তা দেখতে ভিড় জমান বহু মানুষ। বনগাঁ থেকে এসেছিলেন সংযুক্তা চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘বিগত বছরগুলিতে চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজো দেখেছিলাম। তবে কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর আমেজটা অন্যরকম। এসে খুব ভালো লাগছে।›
শনিবার কৃষ্ণনগরে তখনও জগদ্ধাত্রীর আরাধনা শুরু হয়নি। প্রথা মেনে রবিবার ভোর থেকেই তা শুরু হয়। কিন্তু কৃষ্ণনগরের একদিনের জগদ্ধাত্রী পুজোর দিন সংখ্যা বাড়ছে বলেই মনে করছেন শহরবাসী। কারণ শুক্রবার রাতেও কৃষ্ণনগরের বিভিন্ন পুজো মণ্ডপে সাধারণ মানুষের ভিড় দেখা যায়। যদিও তখন প্রতিমা সজ্জার শেষ মুহূর্তের কাজ চলছিল জোরকদমে। তবে অধিকাংশ পুজোরই শুক্রবার উদ্বোধন হয়। শনিবার কৃষ্ণনগর শহরের রাজপথে দর্শনার্থীদের ভিড় এক লাফে কয়েকগুণ বেড়ে যায়। ঘুরতে আসা দর্শনার্থীদের অনেকেই বলেন, শনিবারের উৎসবের আমেজ দেখে বলা যায় না যে, কৃষ্ণনগরের একদিনে জগদ্ধাত্রী পুজো হয়। শনিবার আন্দুল থেকে এসেছিলেন প্রিয়াঙ্কা দাস। তিনি বলেন, ‘কর্মসূত্রেই কৃষ্ণনগর এসেছিলাম। কৃষ্ণনগরের বিখ্যাত ‘বুড়িমার কথা অনেকবার শুনেছি। একবার মাকে দর্শনের খুব ইচ্ছে ছিল। তাই সেই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইনি। বুড়িমাকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে।’ কৃষ্ণনগর স্টেশন ছেড়ে বউবাজারে রাস্তা ধরে এগলেই দেখা যায় আলোকসজ্জায় ভরে উঠেছে জনপদ। বউবাজার বারোয়ারির থিম ‘মহাসমারোহে এসো হে পরমতরে’। বিভিন্ন শিল্পের ছোঁয়ায় পুজো কমিটি তাদের থিম ফুটিয়ে তুলেছে। এছাড়াও বাঘাডাঙা বারোয়ারির আলপনা থিম নজর কেড়েছে। সকাল থেকে লোকসমাগম হলেও দুপুরে উপর ভিড় উপচে পড়ে বাঘাডাঙা বারোয়ারিতে। এছাড়াও পাত্রবাজার স্বীকৃতি, রাধানগর অন্নপূর্ণা, গোলাপট্টি বারোয়ারি, চকেরপাড়া বারোয়ারির পুজো দেখতেও বহু মানুষ আসেন। দর্শনার্থীদের ঢল নিয়ন্ত্রণ করতে শনিবার দুপুর থেকেই যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়। পাশাপাশি নজর কেড়েছে ঘূর্ণির বিভিন্ন পুজো কমিটির থিমও।