• ‘জয়শ্রী’র ব্ল্যাকমেলের বলি উপ পুরপ্রধান? সুইসাইড নোট ও পরিবারের দাবিতে ঘনাচ্ছে রহস্য
    প্রতিদিন | ১৭ নভেম্বর ২০২৪
  • অর্ণব দাস, বারাকপুর: ব্ল্যাকমেলের বলি উত্তর বারাকপুর পুরসভার নিখোঁজ ভাইস চেয়ারম্যান সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়? তাঁর নিখোঁজ ও মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে রহস্য ঘনাচ্ছে আরও। এক মহিলার বিরুদ্ধে সত্যজিৎবাবুকে ব্ল্যাকমেল করে টাকা হাতানোর অভিযোগ তুলেছেন আত্মীয় ও স্থানীয় বাসিন্দারা। মৃতদেহের পাশ থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তা নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ তদন্তকারীরা। আর সেই সুইসাইড নোটের উপর ভিত্তি করেই পরিবারের অভিযোগ, ওই মহিলা ব্ল্যাকমেল করে লাখ লাখ টাকা আদায় করেছেন এবং সত্যজিৎবাবুকে ঠেলে দিয়েছেন আত্মহত্যার পথে। তবে ঘটনা ঠিক কী ঘটেছে, তা জানতে চলছে তদন্ত।

    জানা গিয়েছে, সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯৮৪ সাল থেকে টানা উত্তর বারাকপুর পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। গত পুরসভা নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর দল তাঁকে ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়। তাঁর বাড়ি উত্তর বারাকপুরের আনন্দমঠ বি-ব্লকে। সম্প্রতি সেই বাড়ির সংস্কারের কাজ চলায় পাশের একটি বাড়িতে তিনি পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকছিলেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার ভোর পাঁচটা নাগাদ সত্যজিৎবাবু বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলেন। তার পর আর ফেরেননি। রাত সাড়ে ৮টা-৯টা নাগাদ ভাইস চেয়ারম্যানের মোবাইল বন্ধ পেয়ে দলীয় কার্যালয় ও পরিচিতদের কাছে খোঁজ নিলেও হদিশ মেলেনি। ফলে দুশ্চিন্তায় রাতেই নোয়াপাড়া থানায় অভিযোগ জানায় পরিবার।

    এর পর শনিবার সকাল দশটা নাগাদ ভাড়া বাড়ির ছাদের একটি পরিত্যক্ত ঘরে সত?্যজিৎবাবুর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পাওয়া যায়। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধারের সময় একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার করে। বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (নর্থ) গণেশ বিশ্বাস জানান, “তদন্ত একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তাই এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়। তবে, একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে। সেটি যাচাই করা হচ্ছে।” তবে সুইসাইড নোট সম্পর্কে পুলিশ খোলসা করে কিছু বলতে না চাইলেও আত্মীয় ও স্থানীয়রা তার ভিত্তিতেই এক মহিলাকে মৃত্যুর জন্য দায়ী করেছেন। পরিবারের সদস্যরা বলেন, “দাদার (সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়) মৃত্যুর জন্য জয়শ্রী দাস দায়ী। সব কথা দাদা চিঠিতে লিখেছেন। বছর খানেক ধরে এই জয়শ্রী ব্ল্যাকমেল করে দাদার থেকে লাখ লাখ টাকা নিয়েছে। এই কারণেই দাদা খুবই চাপে ছিল, অনেক কষ্ট পেয়েছে। আমরা জয়শ্রী দাসের শাস্তির চাই।”

    জানা গিয়েছে, জয়শ্রী নামে ওই মহিলার বাড়ি মোহনপুরের লম্ফ বাজার এলাকায়। ইতিমধ্যেই সুইসাইড নোট যাচাই করার পাশাপাশি ভাইস চেয়ারম্যানের ফোনের কল লিস্ট, মেসেজ-সহ আনুষঙ্গিক বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উত্তর বারাকপুর পুরসভার চেয়ারম্যান মলয় ঘোষ জানিয়েছেন, “বৃহস্পতিবার বিকেলেও পুরসভায় সত্যজিতের সঙ্গে আমার অনেকক্ষণ কথা হয়েছে। শুক্রবার তাঁর পরিবারের থেকে নিখোঁজ হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু এদিন সকালে তাঁর দেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে আমি হতবাক হয়ে গিয়েছি।ঠিক কী ঘটনা ঘটেছে, পুলিশের তদন্তেই সবটা পরিষ্কার হবে।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)