• ফ্ল্যাটের কাজ কতদূর? প্রতি তিনমাসে তথ্য ‘রেরা’য় , ক্রেতাকে অন্ধকারে রাখলেই জরিমানা
    বর্তমান | ১৯ নভেম্বর ২০২৪
  • প্রীতেশ বসু, কলকাতা: প্রোমোটারের শর্ত মেনে পাওনা মিটিয়ে দিয়েছেন। গত মাসেই ফ্ল্যাটের চাবি হাতে পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন জানতে পারছেন, কাজ অনেকটা বাকি এখনও! আরও কতদিন এভাবে ঝুলিয়ে রাখা হবে, তাও স্পষ্ট নয়। ফ্ল্যাট কেনাবেচার বাজারে এমন ঘটনা আকছার ঘটে চলেছে। লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যাঙ্ক লোন করে বা দীর্ঘদিনের সঞ্চয় ভেঙে টাকা মেটানোর পরও সাধের ফ্ল্যাট কবে পাবেন, সেটাই অনিশ্চিত। ফ্ল্যাটের ক্রেতাদের এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতে কঠোর সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। এখন থেকে ফ্ল্যাট তৈরির কাজ কতটা এগল, তার যাবতীয় তথ্য ও ছবি নির্দিষ্ট সময় অন্তর ‘আপলোড’ করতে হবে ‘রেরা’র (ওয়েস্ট বেঙ্গল রিয়েল এস্টেট রেগুলেটরি অথরিটি) ওয়েবসাইটে। অন্যথা হলে, মোটা অঙ্কের জরিমানা গুণতে হবে সংশ্লিষ্ট প্রোমোটারকে। 


    রেরা’র ওয়েবসাইটে গিয়ে যে কোনও ক্রেতা জেনে নিতে পারবেন তাঁর ফ্ল্যাটের কাজ কতটা এগল। প্রোমোটার বা নির্মাণ সংস্থাকে প্রতি কোয়ার্টারে অর্থাৎ তিন মাস অন্তর এই তথ্য ও ছবি ‘জিও ট্যাগিং’ সহ তুলে দিতে হবে। প্রতি ত্রৈমাসিকে কাজের অগ্রগতির খতিয়ান ‘রেরা’র ওয়েবসাইটে না তুললে, সতর্ক করে নির্মাণকারীকে আরও ১৪ দিন সময় দেওয়া হবে। তার মধ্যেও কোনও হেলদোল না হলে, প্রথম তিন মাসের জন্য জরিমানা হবে ২৫ হাজার টাকা। দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের পরও একই গাফিলতি চালিয়ে গেলে জরিমানার পরিমাণ হবে ৫০ হাজার টাকা। এভাবে পরপর চারটি কোয়ার্টারেই কোনও তথ্য ও ছবি না দিলে নির্মাণসংস্থা বা প্রোমোটারকে মোট প্রকল্প খরচের ৫ শতাংশ টাকা জরিমানা করা হবে। সরকারের কর্তাদের আশা, কঠোর নিয়ম লাগু হলে ক্রেতাদের হয়রানি কমবে। চলতি সপ্তাহেই এ সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি হয়ে যেতে পারে।’ প্রসঙ্গত, রাজ্যে কোনও নতুন ফ্ল্যাট বিক্রি করতে গেলে ‘রেরা’য় রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক। আগে ৫০০ বর্গমিটারের (৭.৪৭৫ কাঠা) চেয়ে বড় জমিতে গড়ে ওঠা আবাসন বা আটটির চেয়ে বেশিফ্ল্যাট থাকলে ‘রেরা’ কার্যকর হতো। বর্তমানে ২০০-২৫০ বর্গমিটার জমি বা ছ’টির বেশি ফ্ল্যাট নিয়ে কোনও আবাসন হলেই তা ‘রেরা’র আওতায় আসে। 


    কীভাবে তথ্য ও ছবি ‘আপলোড’ করা যাবে ‘রেরা’র ওয়েবসাইটে? জানা গিয়েছে, কোনও ফ্ল্যাট ‘রেরা’য় নথিভুক্ত বা রেজিস্ট্রেশন হলে নির্মাণকারীকে একটি আইডি এবং পাসওয়ার্ড দেওয়া হয়। তা ব্যবহার করেই ওয়েবসাইটে তথ্য তুলে দিতে পারবেন নির্মাণকারীরা। ক্রেতাদের জন্য অবশ্য কোনও পাসওয়ার্ড নেই। যে কোনও সময় তাঁরা ‘রেরা’র ওয়েবাসাইটে গিয়ে নির্দিষ্ট ফ্ল্যাট বা আবাসনের বর্তমান ‘স্ট্যাটাস’ দেখে নিতে পারবেন। সেক্ষেত্রে প্রোমোটার চাইলেও ক্রেতাকে বিভ্রান্ত বা ভুল পথে চালিত করতে পারবেন না। 
  • Link to this news (বর্তমান)