নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: মাদারিহাটে আজ ‘দুর্গ’ রক্ষায় ঘোর সংশয়ে বিজেপি। ইভিএম খোলার আগের দিন শুক্রবার কার্যত হতাশার সুর আলিপুরদুয়ারের সাংসদ মনোজ টিগ্গার গলায়। ভোট শেষের পর যতটা জোরের সঙ্গে ‘মাদারিহাটে বিজেপি জিতবে’ বলে দাবি করেছিলেন মনোজ, শুক্রবার তার লেশমাত্র ছিল না গেরুয়া শিবিরের ‘ভোট কাণ্ডারি’র গলায়। বরং কিছুটা সংশয় প্রকাশ করে তিনি বলেন, মানুষের মন তো, পরিবর্তন হতেই পারে। মানুষের মধ্যে অনেক চাওয়া-পাওয়া থাকে। ভোটে তার প্রভাব পড়ে।
তাঁর বক্তব্যে রীতিমতো হতাশার সুর ঝরে পড়লেও গণনার আগে দলের কর্মীরা যাতে একেবারে হতোদ্যম হয়ে না পড়েন, সেকথা মাথায় রেখেই আলিপুরদুয়ারের সাংসদের দাবি, মার্জিন ঊনিশ-বিশ যাই হোক না কেন, মাদারিহাটের মানুষ বিজেপিকেই জেতাবেন বলে আমাদের বিশ্বাস।
এদিকে, মাদারিহাট নিয়ে বিজেপি যখন মুষড়ে পড়েছে, কোচবিহারের সিতাই বিধানসভা আসনে জয়ের মার্জিন লাখ ছাড়াতে পারে এই হিসেবনিকেশে ব্যস্ত তৃণমূল কংগ্রেস। মাদারিহাট একসময় আরএসপি’র ঘাঁটি ছিল। তারপর সেখানে কার্যত নিজেদের গড় বানিয়ে তোলে পদ্ম শিবির। কিন্তু এবার তৃণমূলের উন্নয়নের সঙ্গে মাদারিহাটে উপ নির্বাচনের আগে বিজেপির অন্যতম ‘গলার কাঁটা’ হয়ে দাঁড়ান প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা দলের আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন সাংসদ জন বারলা। নাম না করে মনোজের বিরুদ্ধে ক্রমাগত সুর চড়ান তিনি। ভোটে বারলার অনুগামীরা ‘অন্তর্ঘাত’ করেছেন বলে মনে করছে বিজেপির একাংশ।
বিজেপি সূত্রে খবর, দলের বুথস্তর থেকে যে রিপোর্ট জমা পড়েছে, তাতে স্পষ্ট, বীরপাড়া, গয়েরকাটা, বিন্নাগুড়ি, রাঙালিবাজনা, শিশুবাড়িতে মোটেই তাদের পক্ষে ভালো ভোট হয়নি। রাজ্য সরকার চা সুন্দরী থেকে ক্রেস, পানীয় জল, ফাউলাই, জয় জোহার পেনশন সহ নানা প্রকল্প নিয়ে পাশে থাকায় চা শ্রমিকদের একটা বড় অংশ মুখ ফিরিয়েছে বিজেপির থেকে। এসব কারণে তৃণমূলের দিকেই গিয়েছে বন্ধ বাগানের বেশিরভাগ ভোট। পরিযায়ী শ্রমিকদের ভোটের দিন নিয়ে আসতে না পারা দলের ভোটব্যাঙ্কে প্রভাব ফেলেছে। বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েও বীরপাড়ায় রেলওয়ে ওভার ব্রিজ না করতে পারা উপ নির্বাচনের ফলে প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিজেপির অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট। এনিয়ে মনোজ টিগ্গার বক্তব্য, রাজ্য জমি না দেওয়ায় যে আমরা বীরপাড়ায় আরওবি করতে পারিনি, সেটা মানুষ হয়তো বুঝল না।