কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিলেন তৃণমূলের ছ’জন বিধায়ক। কৃষ্ণনগর লোকসভার অধীন পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্রের পাঁচ তৃণমূল বিধায়ক এবং মহুয়ারই পুরনো বিধানসভা কেন্দ্র করিমপুরের তৃণমূল বিধায়ক স্বাক্ষর করেছেন ওই অভিযোগপত্রে।তাঁরা হলেন করিমপুরের বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহরায়, চাপড়ার বিধায়ক রুকবানুর রহমান, নাকাশিপাড়ার বিধায়ক কল্লোল খাঁ, পলাশিপাড়ার বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য (যিনি সম্প্রতি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জামিন পেয়েছেন), কৃষ্ণনগর দক্ষিণের বিধায়ক উজ্জ্বল বিশ্বাস এবং কালীগঞ্জের বিধায়ক নাসিরুদ্দিন আহমেদ (লাল)।
তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে লেখা ওই চিঠিতে সই নেই তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহা এবং কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক মুকুল রায়ের। যিনি অসুস্থ অবস্থায় গৃহবন্দি। অর্থাৎ, মহুয়ার লোকসভা কেন্দ্র কৃষ্ণনগরের পাঁচ জন বিধায়কই তাঁর বিরুদ্ধে দলনেত্রীর কাছে অভিযোগ করেছেন। তাঁদের সঙ্গেই অভিযোগ করেছেন করিমপুরের বিধায়ক।
সংসদের শীতকালীন অধিবেশন চালু থাকায় মহুয়া আপাতত দিল্লিতে। তাঁর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
সাংসদ মহুয়ার বিরুদ্ধে ছয় বিধায়কের অভিযোগ, তিনি বিধায়কদের ‘এড়িয়ে’ তিন ব্লক সভাপতি-সহ ১১৬ জন বুথ সভাপতি এবং ১৬টি অঞ্চল সভাপতি বদল করেছেন। দ্বিতীয়ত, মহুয়া ওই বিধায়কদের ‘এড়িয়ে’ গিয়ে তাঁদের এলাকায় যাতায়াত করেন। বিধায়কের বিরোধী গোষ্ঠীদের ‘হাওয়া’ দিয়ে নদিয়া জেলার রাজনীতিতে মহুয়া ‘অস্থিরতা’ তৈরি করছেন বলেও অভিযোগ করেছেন তাঁরা। তাঁদের আরও অভিযোগ, সংখ্যালঘু এলাকায় কুখ্যাত ‘তোলাবাজ ও সমাজবিরোধীদের’ নিয়ে চলাফেরা করে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন তিনি। বর্তমান বিধায়কদের সরিয়ে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী করবেন বলে একাধিক ব্লকের নেতাদের প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছেন। চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে যে, জেলায় বিজেপির বিরোধী কোনও কর্মসূচিতে তাঁকে দেখা যায় না। উল্টে দলেরই বিধায়কদের বিরুদ্ধে যে কোনও ধরনের পদক্ষেপ করতে ‘সক্রিয় ইন্ধন’ জোগাচ্ছেন তিনি।
উল্লেখ্য,২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনেই অভিযোগ উঠেছিল, চাপড়া বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি জেবের শেখকে ‘নির্দল’ প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়েছিলেন মহুয়া। যদিও সেখানে জেতেন রুকবানুর। তাঁদের আশঙ্কা, আগামী বিধানসভা ভোটেও ফের তেমনই পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তাতে নির্বাচনী পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলেই অভিমত মহুয়ার বিরোধী এক তৃণমূল বিধায়কের। তৃণমূল সুপ্রিমোর পাশাপাশি অভিযোগপত্রটি দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীকেও।