ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ এলাকা চিহ্নিতকরণে ওয়ার্ডভিত্তিক সমীক্ষা শুরু
বর্তমান | ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বিগত বছরগুলির তুলনায় চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই কম। আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালে ডেঙ্গু পরিস্থিতির আরও উন্নতির লক্ষ্যে এখন থেকেই ঝাঁপাচ্ছে রাজ্য। ২০২৫ সালের জন্য রূপরেখা তৈরি করে কাজও শুরু করে দিয়েছে রাজ্য নগরোন্নয়ন সংস্থা বা সুডা। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ওয়ার্ডভিত্তিক সমীক্ষার কাজে নেমে পড়েছে রাজ্যের ১২৯টি পুরসভা।
প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ভেক্টর কন্ট্রোল মনিটরিং অফিসার ও ভেক্টর কন্ট্রোল টিমের সুপারভাইজাররা যৌথভাবে বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা চালাবেন। ডেঙ্গুবাহক মশার বংশবিস্তারের অনুকূল পরিস্থিতি রয়েছে, এরকম জায়গা নজরে এলেই ‘আশ্বাস’ অ্যাপের মাধ্যমে দ্রাঘিমাংশ ও অক্ষাংশ সহ স্থানটির ছবি ও তথ্য নথিভুক্ত করতে হচ্ছে। এই ছবি ও তথ্য প্রতিদিন পুরসভার পাশাপাশি রাজ্যস্তর থেকেও পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। নথিভুক্তকরণের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর ওই তথ্যের ভিত্তিতে একটি মাইক্রোপ্ল্যান তৈরি করে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে পুরসভাগুলি।
এই কর্মসূচির প্রথম ধাপ হল ঝুঁকিপূর্ণ জায়গাগুলি চিহ্নিত করা। এক্ষেত্রে সাতটি বিশেষ পরিস্থিতি থাকলে বাড়তি গুরুত্ব ও নজর দিতে বলা হয়েছে পুরসভাগুলিকে। যেমন, ফাঁকা জমিতে কোথাও আবর্জনা জমতে থাকলে তা চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। কচুরিপানা ভর্তি জলাশয় এবং যেসব পুকুর বা ডোবার ধারে কচুগাছ আছে, সেগুলিও চিহ্নিত করতে হবে। কোথাও ঢাকা দেওয়া নর্দমা সমস্যা সৃষ্টি করলে, উপচে পড়া ভ্যাট, রাস্তার ধারে বা নদীর পারে কোথাও আবর্জনা জমলে স্থানগুলিকে ডেঙ্গু ছড়ানোর প্রশ্নে ঝুঁকিপূর্ণ বলে গণ্য করা হবে। সমস্ত বড় আবাসনের ছাদ এবং ভিতরের পরিস্থিতি নজরে রাখতে হবে পুরসভাগুলিকে। নির্মীয়মাণ বাড়ির ক্ষেত্রে সেপটিক ট্যাঙ্ক, জলের রিজার্ভার, লিফটের জন্য ফাঁকা রেখে দেওয়া জায়গা মশার বংশবিস্তারের উপযুক্ত ক্ষেত্র হতে পারে। পরিত্যক্ত বাড়ি, গবাদি পশুর খাটাল, ফ্যাক্টরি ও মিলের যেখানে জল জমার আশঙ্কা থাকে, সেগুলিও চিহ্নিত করতে নির্দেশ দিয়েছে সুডা। এমনকী, ধর্মীয় বা দর্শনীয় স্থান সহ পিকনিক স্পটগুলিকে বিশেষ নজরদারির আওতায় রাখতে বলা হয়েছে। এক পদস্থ কর্তার মতে, বিগত বছরগুলিতে ওয়ার্ডভিত্তিক তালিকা না থাকায় বর্ষাকালে জল না জমা পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যেত না। এবার আগে থেকেই রাজ্যের হাতে এই তালিকা থাকলে বর্ষার আগেই ডেঙ্গু প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে।