চলচ্চিত্র উৎসবে ভুয়ো কার্ড নিয়ে সিনেমা দেখতে এসে পাকড়াও
বর্তমান | ১০ ডিসেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: গলায় একখানা কার্ড ঝোলানো থাকলে আর দেখে কে! নন্দন চত্বরে তিনি বাঘের মতো ঘুরে বেড়ান। যে কোনও প্রেক্ষাগৃহে, যে কোনও সময়ে প্রবেশ করা যায় নিমেষে। কিন্তু একটা গেস্ট কার্ড কিংবা একটা ডেলিগেট কার্ড পেতে কালঘাম ছুটে যায় সিনেপ্রেমীদের, অভিযোগ এমনটাই। তবে এই বছর কয়েকজন তরুণ-তরুণী ওসবের জন্য অপেক্ষা করেননি। নিজেরাই তৈরি করে নিয়েছেন নিজেদের গেস্ট কিংবা ডেলিগেট কার্ড। এদিকে প্রেক্ষাগৃহের নিরাপত্তা রক্ষীদের চোখ সেই ভুয়ো কার্ড এড়িয়ে যায়নি। তাঁরাও খপ করে ধরেছেন। গত কয়েক দিনে প্রায় ৫০টা ভুয়ো কার্ড ধরা পড়েছে। আধিকারিকরা মনে করতে পারছেন না, এরকম আগে হয়েছে কি না! অনেকের বক্তব্য, এই ঘটনা প্রথম।
কীভাবে ধরলেন? সূত্রের কথায়, অনেকেই ভুয়ো কার্ড তৈরি করেছে, কিন্তু কার্ডের মাপ ঠিক করতে পারেনি। রংটাও মেলাতে পারেনি। ওখানেই চোখে পড়েছে। একটি ডেলিগেট কার্ডের মাপ প্রায় ছোট খাতার মাপের। গেস্ট কার্ডের রং করা হয়েছে সবুজ মতো আর ডেলিগেট কার্ড নীল রঙের। কিন্তু ভুয়ো কার্ড সেই রং মেলাতে পারেনি। তাহলে কি পর্যাপ্ত ডেলিগেট কার্ড পাননি সিনেপ্রেমীরা? তথ্য তথা নন্দন অধিকর্তা শর্মিষ্ঠা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘ডেলিগেট কার্ড প্রতিবার যেমন হয়, সেরকমই করা হয়েছে। যথেষ্ট গেস্ট কার্ড বিলি করা হয়েছে। কলকাতার মানুষ সিনেমাপ্রেমী। প্রতিদিনই লক্ষ লক্ষ মানুষ আসছেন। এমনকী ভিড় সামলাতে পুলিসকেও বেগ পেতে হচ্ছে। হয়তো এঁরা কোনও কারণে কার্ড জোগাড় করতে পারেননি।’ কর্তৃপক্ষের দাবি, যাঁরা এই ভুয়ো কার্ড নিয়ে এসেছেন, তাঁদের কাছে জানা গিয়েছে, কিছু সাইবার ক্যাফে থেকে টাকার বিনিময়ে এই কার্ড দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বেশ কয়েক বছর হল, চলচ্চিত্র উৎসবে বিনামূল্যে ডেলিগেট কার্ড দেওয়া হয়। এমনকী প্রতিদিন ডেইলি পাসও দেওয়া হয়। সূত্রের খবর, মূলত যাদবপুর ও হাওড়ার সালকিয়ার কয়েকটি সাইবার ক্যাফে থেকে এরকম আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, মূলত নন্দন ও রবীন্দ্র সদন প্রেক্ষাগৃহ থেকেই প্রচুর ভুয়ো কার্ড পাওয়া গিয়েছে। যাঁরা ভুয়ো কার্ড নিয়ে এলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে নন্দন কতৃপক্ষ? শর্মিষ্ঠা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। সকলেই সিনেমা দেখতে এসেছিলেন। আমরা ওঁদের বলেছি, এরকম করবেন না।’