• কৃষ্ণনগর শহরেই উত্তরবঙ্গের গাঁজার চাহিদা বেড়ে চলেছে, সক্রিয় সিন্ডিকেট
    বর্তমান | ১১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: উত্তরবঙ্গের গাঁজার চাহিদা বাড়ছে কৃষ্ণনগর শহরে। অন্ধকার হলেই শহরের বিভিন্ন এলাকায় সুখটান দিতে জড়ো হচ্ছে স্বল্পবয়সিরা। প্রধান খদ্দের হিসেবে তাদেরকেই টার্গেট করছে গাঁজার ব্যবসায়ীরা। মনে করা হচ্ছে, কৃষ্ণনগর শহরের এই এলাকায় গাঁজা সরবরাহের সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়েছে বলে পুলিস মনে করছে। উত্তরবঙ্গ থেকে ‘ভালো’ গাঁজা এনে ছোটো ছোটো পুরিয়া করে বিক্রি করা হচ্ছে নতুন প্রজন্মকে। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, যারা উত্তরবঙ্গ থেকে গাঁজা আনার কাজ করছে, তাদের অনেকেই সদ্য কাজ হারিয়েছে। গাঁজা পাচারের কাজে যুক্ত হওয়ার আগে কেউ জলের ব্যবসা, আবার কেউ দোকানে জোগাড়ের কাজ করত। এবার তাদের হাত ধরেই শহরে গাঁজা ছড়িয়ে পড়ছে। তাই নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে পুলিস প্রশাসনের। সম্প্রতি কালীগঞ্জে বিপুল পরিমাণ গাঁজা সহ কৃষ্ণনগরের তিন বাসিন্দাকে পুলিস গ্রেপ্তার করেছে। তাঁদের জিজ্ঞেসাবাদ করেই এমন তথ্য উঠে এসেছে। 


    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েকদিন আগেই কালীগঞ্জ থানার পলাশি এলাকা থেকে সুজন মণ্ডল, সুমন মণ্ডল ও প্রসেনজিৎ ঘোষ নামে তিনজন পাচারকারীকে পুলিস গ্রেপ্তার করেছিল। এর মধ্যে লরি চালক সুজন মণ্ডল হল সুমনের বাবা। প্রসেনজিৎ সুমনের বন্ধু। কোচবিহার থেকে লরি করে ৫২ কেজি গাঁজা কৃষ্ণনগরে নিয়ে আনছিল। সেই সময় পুলিস তাদের ধরে ফেলে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিস হেফাজতে নেওয়া হয় তাদের।  


    জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, ধৃত সুমন কৃষ্ণনগর রেলস্টেশনের কাছে জলের ব্যবসা করত। তার বন্ধু প্রসেনজিৎ রুটির দোকানে কাজ করত। কিন্তু কয়েক মাস আগেই তারা সেই কাজ ছেড়ে দেয়। তারপর তারা গাঁজা পাচারের সঙ্গে যুক্ত হয়। এর মাস খানেক আগে দু’বার কোচবিহার থেকে কৃষ্ণনগরে গাঁজা নিয়ে এসেছিল তারা। সেই গাঁজা কৃষ্ণনগরে এক ব্যক্তির কাছে সরবরাহ করেছিল। তার জন্য মোটা টাকাও পেয়েছিল তারা। কোচবিহারের কোন ব্যক্তির কাছ থেকে তারা গাঁজা নিয়েছিল, তার নাম পরিচয় ইতিমধ্যেই জানতে পেরেছে পুলিস। পাশাপাশি কৃষ্ণনগরের কোন ব্যক্তিকে গাঁজা হস্তান্তরিত করার কথা ছিল, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিস। তবে এই প্রথম নয়, কৃষ্ণনগরে দীর্ঘদিন ধরেই এই গাঁজা সরবরাহ হয়ে আসছে।


    কৃষ্ণনগর পুলিস জেলার এক আধিকারিক বলেন, কৃষ্ণনগরে শহরে সেই গাঁজা সরবরাহ করার কথা ছিল সুমন ও প্রসেনজিতের। আমরা সব দিক তদন্ত করছি। কৃষ্ণনগর শহর এদের আগেও কেউ গাঁজা সরবরাহ করেছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 


    প্রসঙ্গত শহরের অল্পবয়সি যুবকদের ক্রমশ নেশায় আসক্ত হয়ে যাওয়ার প্রবণতা উদ্বেগ বাড়িয়েছে শহরের বাসিন্দাদের। মদ, গাঁজার পাশাপাশি হেরোইনের নেশাও বেড়েছে কলেজ পড়ুয়া উঠতি যুবকদের। শহরবাসীর অভিযোগ, সেই তালিকায় ভিড় বাড়াতে শুরু করেছে যুবতীরাও। সামান্য টাকা খরচ করলেই হাতে পৌঁছে যাচ্ছে নেশার সামগ্রী। মনে করা হচ্ছে, সেই সামগ্রীর জোগান দিচ্ছে শহরের অসাধু চক্র। চলতি বছরে কোতোয়ালি থানার পুলিস একাধিকবার নেশার সামগ্রী পাচারের সময় বাজেয়াপ্ত করেছে।
  • Link to this news (বর্তমান)