নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: জনতার চাপে অবশেষে পিছু হটল রেল। দেশের প্রথম মেট্রো রুটে রাত্রীকালীন পরিষেবায় নির্ধারিত ভাড়ার উপর বাড়তি ১০ টাকা ‘সারচার্জ’ চাপানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সোম থেকে শুক্রবার কবি সুভাষ-দমদম রুটে রাত ১০টা ৪০ মিনিটের ‘নাইট সার্ভিসে’ এই অতিরিক্ত ভাড়া লাগু হওয়ার কথা ছিল। মঙ্গলবার থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হতো। রেলের এই সিদ্ধান্ত সামনে আসার পরই যাত্রী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। নির্দিষ্ট দূরত্বের জন্য দু’রকম ভাড়া কীভাবে নেওয়া সম্ভব, তা নিয়ে জোরালো প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। বেগতিক বুঝে তাই রেল পিছিয়ে এল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
মঙ্গলবার রাত ৮টা নাগাদ আচমকা কলকাতা মেট্রোর তরফে জানানো হয়, ১০ টাকার সারচার্জ আপাতত নেওয়া হবে না। লিখিত বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, টেকনিক্যাল কারণে এই সিদ্ধান্ত পিছিয়ে দেওয়া হল। একটি সূত্রের দাবি, সম্প্রতি রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের কাছে বঙ্গ বিজেপির নেতারা এই অতিরিক্ত ভাড়ার বিষয়টি তোলেন এবং যাত্রীদের আপত্তির কথা জানান। তারপরই কলকাতা মেট্রো ‘আজব’ নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেয়। মেট্রো ভবনের এক শীর্ষকর্তা বলেন, ‘কিছু অপেশাদার অফিসারের জন্য মুখ পুড়ল রেলের। কলকাতা মেট্রোর কমার্শিয়াল ও জনসংযোগ বিভাগের হাতেগোনা কয়েকজন গত এক বছর ধরে যাত্রী ও কর্মী বিরোধী পদক্ষেপ করে চলেছেন। এনিয়ে রেলবোর্ডের কাছে লিখিত অভিযোগও করা হয়েছিল।’
প্রসঙ্গত, কলকাতা হাইকোর্টের গুঁতোয় চলতি বছরের ২৪ মে থেকে ১০টা ৪০ মিনিটের এই স্পেশাল মেট্রো সার্ভিস চালু হয়েছিল। কিন্তু এই পরিষেবা দিতে গিয়ে যাত্রী হয়রানির একাধিক অভিযোগ সামনে আসে। যেমন, দক্ষিণেশ্বরের বদলে দমদমে এই মেট্রোর যাত্রা শেষ হয়ে যায়। সার্ভিস চলাকালীন সংশ্লিষ্ট রুটের সমস্ত স্টেশনে বন্ধ হয়ে যায় টিকিট কাউন্টার। অর্থাৎ, ইউপিআই ব্যবস্থার মাধ্যমে পেমেন্টের ব্যবস্থা না থাকলে রাতের শেষ মেট্রোয় ওঠা অসম্ভব। কারণ, নগদ দিয়ে টিকিট ভেন্ডিং মেশিন থেকে টোকেন মিলবে না। স্মার্ট কার্ড চললেও বহু যাত্রীর কাছে সেটি থাকে না। তাছাড়া, স্মার্ট কার্ড রিচার্জের উপর বোনাস ১০ টাকা থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করায় বহু যাত্রী কার্ড ছেড়ে দিয়েছেন। সব মিলিয়ে নাইট সার্ভিস নিয়ে যাত্রীদের অসন্তোষের শেষ নেই।