• লাইব্রেরি সংস্কারে সাংসদ কোটা থেকে অর্থ প্রদান অভিষেকের
    বর্তমান | ১২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, বজবজ: স্বাধীনতারও ৩৬ বছর আগে, অর্থাৎ ১৯১১ সালে তৈরি হয়েছিল বজবজ পাবলিক লাইব্রেরি। ৪ নম্বর রেলগেটের কাছে দড়মার বেড়া আর টালির ছাউনির ঘেরাটোপের মধ্যে। তখন এই গ্রন্থাগার তৈরির জন্য উদ্যোগ নিয়েছিলেন নন্দলাল ঘোষ, বেনু গঙ্গোপাধ্যায়, রাজকুমার চক্রবর্তী, গণেশ ঘোষ, মৃণাল সেন, মিলন মিত্র, লেখক শৈলেন মিত্র এবং বঙ্কিম ঘোড়ুইয়ের মতো ব্যক্তিত্ব। সকলে নিজেদের পকেট এবং পড়শিদের থেকে চাঁদা তুলে এই কাজ করেছিলেন। কারণ বই পড়ার ব্যাপারে এলাকার পাঠকদের বিপুল উৎসাহ থাকলেও তা পূরণ করার জন্য কোনও গ্রন্থগার ছিল না। তাঁদের কথা ভেবেই এটা তৈরি করা হয়।

    সেই বজবজ পাবলিক লাইব্রেরির বয়স এখন একশো তেরো বছর। পরে নিজস্ব জমি কিনে সেখানে ধীরে ধীরে তৈরি করা দোতলা পাকা বাড়ির মধ্যে স্থানান্তরিত হয় গ্রন্থাগার। কিন্ত এই দীর্ঘ সময়ে উপযুক্ত সংস্কারের অভাবে গ্রন্থাগারের ভবন ক্রমশ ভেঙে পড়েছে। ছাদের অ্যাসবেসটস ফেটে জল পড়ে। রঙ হয়নি অনেকদিন। দেওয়াল থেকে পলেস্তরা খসে পড়ছে। অনেক জায়গায় সিমেন্টের আস্তরণ খুলে গিয়ে লোহার জং ধরা রড বেরিয়ে এসেছে। উমপুনের সময় ছাদ থেকে জল পড়ে ভিতরে দুষ্প্রাপ্য অনেক বই নষ্ট হয়েছে। পাঠকদের কথায়, ভালো করে সংস্কার না হলে ঘরগুলি আরও স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে যাবে। তাতে আরও বই নষ্ট হতে পারে।

    এক সময় এই গ্রন্থাগারের নিয়মিত পাঠক ছিলেন বজবজ পুরসভার চেয়ারম্যান গৌতম দাশগুপ্তর বাবা প্রয়াত নৃপেন দাশগুপ্ত। তাঁর মৃত্যুর পর গৌতমবাবু বাবার তিনটি আলমারি সহ এক হাজার বই এখানে দান করেছেন। এইভাবে বই বেড়ে বেড়ে এখন তা কুড়ি হাজারের কাছাকাছি হয়েছে। কিন্ত সংস্কার না হলে এই সব মূল্যবান বইয়ের সম্ভার ধরে রাখা মুশকিল হবে। তা স্বীকারও করেন পুর চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, এর সংস্কারের জন্য আমরা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে দরবার করেছিলাম। তিনি তাঁর সাংসদ তহবিল থেকে এই গ্রন্থাগার সংস্কারের জন্য পুরসভাকে ১৫ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই পুর ইঞ্জিনিয়াররা গ্রন্থাগার পরিদর্শন করে এসেছেন। আশা করা যায় শীঘ্রই কাজ শুরু হয়ে যাবে। গ্রন্থাগারের সম্পাদক গৌতম খাঁড়া বলেন, ১৯৫৭ সালে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধানচন্দ্র রায় গ্রন্থাগারের ভবন দোতলা করার জন্য অর্থ সাহায্য করেছিলেন। পঁচিশ বছর আগে বিধায়ক অশোক দেব সংস্কারের জন্য অর্থ দিয়েছেন। চেয়ারম্যানের তৎপরতায় এবার সাংসদ তাঁর সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় খুবই ভালো হল। 
  • Link to this news (বর্তমান)