চাষ করে চলে সংসার, টিনের চালের বাড়ি আবাস তালিকা থেকে নাম কাটালেন তইবুর
বর্তমান | ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, জঙ্গিপুর: দু’কামরার কাঁচা-পাকা ঘর। ইটের দেওয়ালের উপরে টিনের ছাউনি দেওয়া। যোগ্য হিসেবে আবাস যোজনার বাড়িও পেয়েছেন। বর্তমানে তিনি নিজের উপার্জনের টাকায় বাড়ি গড়তে পারবেন। তাই আবাস যোজনার তালিকা থেকে তাঁর নাম বাদ নেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন করেন। বৃহস্পতিবার সকালে রঘুনাথগঞ্জ-২ ব্লক অফিসে এসে আবাসের তালিকা থেকে নাম বাতিলের আবেদনপত্র জমা দেন। আবাস যোজনা থেকে নিজের নাম বাতিল করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন রঘুনাথগঞ্জ থানার শেখালিপুরের পেশায় কৃষক তইবুর শেখ। তাঁর এই মনোভাব ও সততাকে কুর্নিশ জানিয়ে ব্লক অফিসে ডেকে পুরস্কৃত করল প্রশাসন। তাঁর এই মনোভাবের প্রশংসা করেছেন এলাকাবাসীও।
এ প্রসঙ্গে রঘুনাথগঞ্জ-২ ব্লকের বিডিও দেবোত্তম সরকার বলেন, আবাসে ঘর পেতে বহু মানুষের নানা কীর্তির মাঝে ওঁর এই আত্মসম্মান বোধ ও সততার জন্য আমি স্যালুট জানাচ্ছি। তাঁর মনোভাবকে সম্মান জানিয়ে আমরা সংবর্ধিত করেছি।
জানা গিয়েছে, ব্লক অফিসের কর্তারা আবাসের নাম ভেরিফিকেশনের জন্য জন্য তাঁর বাড়ি গেলে জানতে পারেন তিনি বাড়ি পেয়েছেন। কর্তারা সবকিছু খতিয়ে দেখে এসে ফাইনাল তালিকা তৈরি করেন। তারপরই তিনি সরকারি বাড়ি না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি গ্রামেই কৃষিকাজ করেন। অবসর সময়ে টিউশনিও করে থাকেন। প্রশাসনকে তিনি জানান, বর্তমানে একটি পাকা বাড়ি করার মতো তাঁর আর্থিক সামর্থ্য রয়েছে। ফলে তিনি সরকারি ঘর নেবেন না। বরং এই ঘর যোগ্য কোনও ব্যক্তির পাওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন। এদিন তার এই সৎ মনোভাবের জন্য ফুলের তোড়া, মিষ্টি ও দামি সাল উপহার দিয়ে সংবর্ধনা দেয় ব্লক প্রশাসন। বিডিও অফিসে বসে তইবুর বলেন, বাবার সঙ্গে কৃষিকাজ করি। আমি একটা ঘর করতে পারব। ফলে আমি চাই এই বাড়িটি যোগ্য কেউ পাক। আমাকে এভাবে উৎসাহ দেওয়ায় খুব ভালো লাগছে। আগামীতে আরও ভালো কাজ করতে উৎসাহিত বোধ করছি। রঘুনাথগঞ্জ-২ ব্লক পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মোমিনা খাতুন বলেন, আবাস নিয়ে যেখানে ভুরি ভুরি অনিয়মের অভিযোগ আসছে, সেখানে এই রকম একটি খবর জেনে গর্বিত বোধ করছি। আশা করি, ওঁকে দেখে অনেকেই শিক্ষা নেবেন।