সংবাদদাতা, ময়নাগুড়ি: একাধিক বৈঠক, বছরজুড়ে সচেতনতা প্রচার, প্রশাসনের ধরপাকড়। এরপরেও ময়নাগুড়ির টোটোচালকদের হুঁশ ফিরল না। পুলিসের নির্দেশ অমান্য করে নো-পার্কিং জোনে টোটো দাঁড় করানো থেকে পুরসভার দেওয়া নম্বর প্লেট নেওয়ার ইচ্ছে পর্যন্ত নেই অনেক টোটোচালকের। এমনকী প্রশাসনের বারংবার বলে দেওয়ার পরেও টোটোর ডান পাশ না আটকে, লুকিং গ্লাস ছাড়াই দেদারে টোটো ছুটে ময়নাগুড়ি শহরে। প্রশাসনের নির্দেশকে কার্যত বুড়োআঙুল দেখিয়ে কিছু চালক নিজেদের খেয়ালখুশি মতো শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা করছে। বৃহস্পতিবার ময়নাগুড়ি ট্রাফিক পুলিসের পক্ষ থেকে ‘বেয়াদপ’ টোটোচালকদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়। বেলা ১২টা থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত মোট ১২টি টোটো বাজেয়াপ্ত করে পুলিস। টোটোচালকদের একাংশ দাবি করেন, পুরসভায় গিয়ে নম্বর প্লেট পাওয়া যাচ্ছে না। তবে টোটোচালকদের দাবিকে ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছে ময়নাগুড়ি পুরসভা।
দুর্গাপুজোর আগে শহরের টোটোর জন্য নম্বর প্লেট তৈরি করে পুরসভা। প্রথম পর্যায়ে এক হাজার নম্বর প্লেট বানানো হয়েছে। কিন্তু মাত্র পাঁচশোর মতো টোটো নম্বর প্লেট লাগিয়ে চলছে। বাকি নম্বর প্লেট পড়েই আছে পুর অফিসে। এদিকে, পুলিস প্রশাসনের ধরপাকড়কে সাধুবাদ জানিয়েছেন পুর চেয়ারম্যান অনন্তদেব অধিকারী। তিনি বলেন, নম্বর প্লেট নেওয়ার ইচ্ছে থাকতে হবে টোটোচালকদের। কিন্তু নম্বর প্লেট থাকলে গ্রামাঞ্চলে চলতে পারবেন না, এই ভয়ে অনেক টোটোচালক তা নিচ্ছেন না। এবার আমরা কঠোর হব, নম্বর প্লেট না থাকলে শহরে চলতে দেব না।
আনন্দনগরের টোটোচালক প্রদীপ দাস বলেন, নম্বর প্লেট না থাকায় পুলিস আটকেছিল। পুলিসকে জানিয়েছি, পুরসভায় দু’দিন গিয়ে নম্বর প্লেট পাইনি। ফের পুরসভায় যাব। প্রশাসনের নিয়ম মেনে চলব বলে জানিয়েছি। ময়নাগুড়ি ট্রাফিক বিভাগের ওসি অতুলচন্দ্র দাস বলেন, ট্রাফিক আইন না মানলে আইনি পদক্ষেপ করা হবে। টোটো আটক করার পাশাপাশি ফের একবার করে চালকদের নিয়ম বলে দেওয়া হচ্ছে। এদিন ১২টি টোটো বাজেয়াপ্ত করেছি।
ময়নাগুড়ি শহর ও গ্রামীণ এলাকায় কত টোটো চলে, সেটা প্রশাসনের জানা নেই। ময়নাগুড়ি পুরসভা এলাকায় কত টোটো রয়েছে সেটাও পুরসভা জানে না। এদিকে প্রতিনিয়ত টোটোর সংখ্যা বাড়ছে। টোটোর সঠিক সংখ্যা জানতে বিশেষ নম্বর প্লেট তৈরি করেছে পুরসভা। কিন্তু শহরের প্রচুর টোটো এখনও নম্বর প্লেট ছাড়াই চলছে।