• হেডফোনে কথা, রেলগেটে ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু যুবতীর
    বর্তমান | ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: রেলগেট নামানো থাকলেও তা ডিঙিয়ে চলছিল পারাপার। কিন্তু তা করতে গিয়ে খুব কাছাকাছি চলে আসা ট্রেনটিকে দেখতে পারেননি বছর ছাব্বিশের এক তরুণী। কানে গোঁজা হেডফোনে কথা বলাই তাঁর কাল হল বলে মনে করছেন প্রতক্ষ্যদর্শীরা। ট্রেনের ধাক্কায় ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তাঁর শরীর। শনিবার সাতসকালে ঘটনাটি ঘটেছে পদ্মপুকুর রেলগেটে। মৃতার নাম অঙ্কিতা পাত্র (২৬)। বাড়ি স্থানীয় বাঙালপাড়ায়। রেলপুলিস দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে।


    পদ্মপুকুরের বাঙালপাড়া বাই লেনের বাসিন্দা অঙ্কিতা মাস ছয়েক আগেই নিউটাউনের একটি নামী তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় চাকরি পান। নাইট ডিউটির পর এদিন সকালে অফিসের বাস তাঁকে পদ্মপুকুর রেল গেটের কিছুটা আগেই নামিয়ে দিয়ে চলে যায়। হেডফোনে কথা বলতে বলতে হেঁটে রেলগেট পার করছিলেন তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, সে সময় আপ লাইনে পুরী-শালিমার এক্সপ্রেস ঢুকছিল। রেলগেট নামানো থাকলেও ওই যুবতী লাইনের মাঝামাঝি চলে যান। স্থানীয়রা চিৎকার করলেও সেই আওয়াজ কানে পৌঁছয়নি তাঁর। ট্রেনের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় যুবতীর। দূরে ছিটকে পড়ে তাঁর হেডফোন, আই কার্ড ও ব্যাগটি। স্থানীয় এক বাসিন্দা জাহাঙ্গীর খান বলেন, মেয়েটির মুখ এতটাই ক্ষতবিক্ষত হয়ে গিয়েছিল যে চেনাই যাচ্ছিল না। আই কার্ডটি দেখে চিনতে পারি আমরা।


    এদিকে মেয়ের মৃত্যুর খবর বাড়িতে পৌঁছতেই জ্ঞান হারান তাঁর মা মৌসুমি পাত্র। বাবা জগাছা হাইস্কুলের শিক্ষক তরুণ পাত্র মুখের ভাষা হারিয়েছেন। কোনওক্রমে বললেন, আগে অন্য একটি কোম্পানিতে কাজের সূত্রে দূরে থাকতে হতো মেয়েকে। মায়ের অসুস্থতার জন্য ছয় মাস আগে এত বড় সংস্থায় কাজে ঢুকল। অন্যান্য দিন রেলগেট পার করেই অফিসের গাড়ি ওকে নামিয়ে দিয়ে যেত। সব শেষ হয়ে গেল। বরাবরই মিশুকে স্বভাবের অঙ্কিতা ছিল প্রতিবেশী ও শিক্ষকদের প্রিয়। বাবার স্কুলেই ছোটবেলা থেকে পড়াশোনা করেন তিনি। পড়াশোনাতেও মেধাবী ছিলেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বিয়ের জন্য কথাবার্তা চলছিল অঙ্কিতার। এদিন সকালেই অঙ্কিতার বাড়িতে ছুটে আসেন তাঁর স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা। তাঁরা বলেন, ও তো শুধু আমাদের ছাত্রী ছিল না। আমাদের মেয়ের মত ছিল। 
  • Link to this news (বর্তমান)