নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: শীত পড়তেই হাওড়ার শরৎসদন চত্বরে পরিবার নিয়ে সময় কাটাতে আসছেন অনেকে। কিন্তু এখনও ভিড় সেভাবে জমছে না দেশের প্রথম থ্রি ডি প্ল্যানেটোরিয়ামে। সপ্তাহান্তের ছুটিতে বাংলা ও হিন্দি শোয়ে দর্শক সংখ্যা গতবারের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে বলে দাবি এখানকার কর্মীদের। এবার বড়দিনের ছুটিতে প্ল্যানেটোরিয়ামে দর্শকদের দীর্ঘ লাইন থাকবে বলে আশাবাদী পুর কর্তৃপক্ষ।
শীতের মরশুমে হাওড়া ময়দানের শরৎসদন চত্বর গমগম করে মানুষের কলতানে। এই সময় বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয় অডিটোরিয়ামে। পাশাপাশি বহু পরিবার কচিকাঁচা নিয়ে ঘুরতে আসনে এখানে। দর্শকদের আকর্ষণ বাড়াতে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে প্রায় ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হয়েছিল ৯৬ আসনের দেশের প্রথম থ্রি ডি প্ল্যানেটোরিয়াম। নাম রাখা হয় হাওড়া প্ল্যানেটোরিয়াম অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোনমিকাল রিসার্চ সেন্টার। মঙ্গলবার বাদে সপ্তাহের বাকি ছ’দিনই বিকেল ৩টে, ৪টে, ৫টা ও ৫টা ৪৫ মিনিটে ইংরেজি, হিন্দি ও বাংলায় পরপর শো দেখানো হয়। টিকিটের দামও কলকাতার বিড়লা প্ল্যানেটোরিয়ামের তুলনায় কম। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ১২০ টাকা ও স্কুল পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে ৭০ টাকা। জানা গিয়েছে, ২০২৩ সালের গরমকালে প্রতিটি শো’য়ে ভিড় থাকলেও চলতি বছর গ্রীষ্মে দর্শক সংখ্যা সেভাবে হয়নি। বিশেষ করে দুপুর ৩টের ইংরেজি শো ছিল একেবারেই ফ্লপ।
কর্মীদের দাবি, ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত প্ল্যানেটোরিয়ামে সব থেকে বেশি ভিড় হয়। চলতি মাসে দুপুর ৩টের ইংরেজি শো’য়ে গড়ে ২৫ জনের বেশি দর্শক এসেছেন। পরের হিন্দি ও বাংলা শো’য়ে ৫০ থেকে ৭০টি আসন ভর্তি হচ্ছে। প্ল্যানেটোরিয়ামের দেখভালের দায়িত্বে থাকা কর্মী তপন দে বলেন, ‘বড়দিনের ছুটি পড়লে এই ভিড় দ্বিগুণ হবে। গত বছর ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছিল। নিঃসন্দেহে এবার টিকিট বিক্রি বাড়বে।’ জানা গিয়েছে, বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষামূলক ভ্রমণের জন্য হাওড়া প্লানেটোরিয়ামের চাহিদা বর্তমানে কয়েকগুণ বেড়েছে। কারণ স্কুলের তরফে শো বুক করা হলে টিকিটের দাম পড়ুয়া পিছু ৫০ টাকা করে নেওয়া হয়। সকাল ১১টা থেকে বেলা ২টো পর্যন্ত স্কুলগুলির জন্য শো বরাদ্দ থাকে। চলতি মাসে কলকাতার একটি ও হাওড়ার তিনটি স্কুল তাদের পড়ুয়াদের জন্য পৃথক শোয়ের ব্যবস্থা করেছিল। হাওড়া পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ডাঃ সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যে সৌরমণ্ডল সম্পর্কে যাতে আরও স্বচ্ছ ধারণা জন্মায়, সেজন্যই এই থ্রি ডি প্ল্যানেটোরিয়াম তৈরি করা হয়েছে। বিভিন্ন স্কুলের প্র্যাক্টিক্যাল পড়াশোনার অঙ্গ হয়ে উঠেছে হাওড়া প্ল্যানেটোরিয়াম।’ নিজস্ব চিত্র