কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের ভোটে জয়জয়কার তৃণমূলের। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ‘গড়’ বলে পরিচিত কাঁথিতে ধরাশায়ী বিজেপি প্রার্থীরা। ১০৮টি আসনের মধ্যে শাসকদল তৃণমূলের দখলে গেল ১০১টি আসন। বিজেপি ছয়টি আসনে জিতেছে। একটি আসনে জিতেছেন এক নির্দল প্রার্থী।
রাজ্যে কোনও সমবায় নির্বাচনে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা এই প্রথম। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচনে মোতায়েন করা হয়েছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। কিন্তু তা সত্ত্বেও নির্বাচন ঘিরে অশান্তির চিত্র চোখে পড়ল। সংঘর্ষ হল তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে। রামনগরে হাতাহাতিতে জড়ায় দুই শিবিরের কর্মী সমর্থকরা। বিজেপির অভিযোগ, ভোটারদের বুথে যেতে বাধা দেয় তৃণমূল। প্রতিবাদ করায় বিজেপি কর্মীদের মারধর করা হয়। এর প্রতিবাদে রবিবার ভোট বয়কটের ডাক দিয়ে পথ অবরোধ করে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। পরে পুলিশ এসে অবরোধ তুলে দেয়।
রবিবার কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচনে ১০৮টি আসনে প্রতিনিধি নির্বাচন হয়েছে। ভোটে লড়েছেন ৪৩০ জন প্রার্থী। কারচুরি রুখতে বুথে বুথে বসেছিল সিসিটিভি ক্যামেরা। ১৬ কেন্দ্রের মধ্যে ১৪টি সেন্টারে ভোট হয়েছে। ভোটার সংখ্যা ৮০ হাজারের বেশি । আধা সেনার টহলদারিতে হয়েছে ভোট। তবে তাঁদের সঙ্গে ছিল রাজ্য পুলিশও। ভোট কেন্দ্রগুলির বাইরে যাতে কোনও ঝামেলা না হয় সেদিকে বিশেষ নজর রেখেছিল পুলিশ। অপ্রীতিকর ঘটনা রুখতে তৈরি করে রাখা হয়েছিল একটি কুইক রেসপন্স টিম। কাঁথি সমবায় নির্বাচনে বেশ কয়েকটি জায়গাকে স্পর্শকাতর এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। প্রতিটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের ২০০ মিটার এলাকা জুড়ে জারি করা হয়েছিল ১৪৪ ধারা। প্রতিটি কেন্দ্রের নিরাপত্তায় ৬০ থেকে ৮০ জন করে পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়েছিল।
এদিন কাঁথি, রামনগর, হেড়িয়া এবং কোলাঘাটে ভোটপর্ব চলাকালীন বুথের কিছু দূরে তৃণমূল ও বিজেপির সমর্থকেরা দফায় দফায় ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছিলেন। সেই গন্ডগোলের মধ্যেই দুপুর ২টোয় ভোটগ্রহণ পর্ব সম্পন্ন হয়। তারপর দুপুর ৩টে থেকে শুরু হয় ভোটগণনা। ভোটের ফলাফলে দেখা যায়, কাঁথি আর মারিশদা ছাড়া কোথাও খাতা খুলতে পারেনি বিজেপি। কাঁথি ১ ব্লকে দু’টি আসন, কাঁথি-২ ব্লকের একটি আসনে জিতেছে গেরুয়া শিবির। বাকি সর্বত্র জিতেছেন শাসকদলের প্রার্থীরা।
ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর তৃণমূল বিধায়ক অখিল গিরি বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত আমরা ১০১ আর বিজেপি ও নির্দল মিলিয়ে ৭টি আসন জিতেছে। এই ভোটে একটা জিনিস স্পষ্ট হয়ে গেল, মমতা ব্যানার্জির মুখ উজ্জ্বল হয়েছে। কাঁথি শুধু নয়, সবকটি বুথেই খাতাই খুলতে ব্যর্থ হয়েছে বিজেপির প্রার্থীরা। মানুষ একচেটিয়াভাবে বিজেপিকে বহিষ্কার করেছে।