• মুর্শিদাবাদে আমগাছে মুকুল ধরার আগে আগাছা দমন শুরু চাষিদের  
    বর্তমান | ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, লালবাগ: আর কিছুদিন পরই আমগাছ মুকুলে ভরে উঠবে। তার আগে গাছকে পুষ্টি জোগানোর লক্ষ্যে আগাছা ও ছত্রাক দমন শুরু করেছেন মুর্শিদাবাদের আমচাষিরা। ডিসেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহের পর থেকে আমগাছে মুকুল ধরা শুরু হয়। ভালো ফলনের জন্য এসময় আমগাছের পরিচর্যা দরকার। গত বছর আমের অফ ইয়ার ছিল। তাই এবছর আমের অন ইয়ারে ভালো ফলন হবে বলে চাষিরা আশায় বুক বাঁধছেন।


    মুকুল ধরার আগে আমগাছের পরিচর্যা-সংক্রান্ত খুঁটিনাটি বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে চাষিদের পাশে দাঁড়িয়েছে জেলা উদ্যানপালন দপ্তর। ওই বিভাগের আধিকারিক প্রিয়রঞ্জন সন্নিগ্রাহী বলেন, মুকুল ধরার সময় শোষক ও ল্যাদাপোকার উৎপাত দেখা দেয়। পোকা দমনে কীটনাশক স্প্রে করতে হবে।


    জেলার লালবাগ, জিয়াগঞ্জ, ভগবানগোলা, লালগোলা, জঙ্গিপুর, ধুলিয়ান প্রভৃতি এলাকায় ২০০’র বেশি ছোটবড় আমবাগান রয়েছে। তবে সাবেক নবাবি তালুক মুর্শিদাবাদই শহরেই আমবাগানের আধিক্য লক্ষ্য করা যায়। মুর্শিদাবাদের ইতিহাস পড়লে জানা যায়, নবাবরা আমের ব্যাপারে শৌখিন ছিলেন। কেউ কেউ আম বিশেষজ্ঞও ছিলেন। কলম ও সংকরায়ণ প্রক্রিয়ায় আমের বেশকিছু নতুন প্রজাতি তৈরি করেছিলেন। সেসময় মুর্শিদাবাদে প্রায় ১৫০রকমের আম চাষ হতো।


    পরবর্তীকালে সংরক্ষণের অভাবে মুর্শিদাবাদের মাটি থেকে অনেকরকম আম হারিয়ে গিয়েছে। তবু এখনও জেলায় প্রায় ১০০রকম আমগাছ রয়েছে বলে চাষিদের দাবি। ডিসেম্বর মাসের শেষদিক থেকে আমগাছে মুকুল আসতে শুরু করে। তার আগে থেকেই গাছের পরিচর্যা শুরু হয়। এসময় গাছের উপরে থাকা আগাছা ও শুকনো ডাল পরিষ্কার করা হয়। তবে সব প্রজাতির গাছে একসঙ্গে পরিচর্যা শুরু হয় না। যেসব প্রজাতির আমগাছে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে অর্থাৎ আগাম মুকুল আসে-সেসব আমগাছের আগাম পরিচর্যা শুরু হয়। যেসব গাছে জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে মুকুল আসে, সেগুলির জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে পরিচর্যা শুরু হয়।আমচাষি বিশ্বনাথ মণ্ডল বলেন, আমগাছের উপরের দিকে সাধারণত দু’ধরনের আগাছা দেখা যায়। সেগুলি আমগাছের মধ্যে চোষক ঢুকিয়ে পুষ্টিরস শোষণ করে। ফলে পুষ্টির অভাবে আমগাছ কমজোরি হয়ে পড়ে। তাই মুকুল ধরার আগেই আগাছা ও ছত্রাক দমন ও শুকনো ডাল পরিষ্কার করতে হয়। মুকুল দেখা দিলে গাছে প্রথম কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। আম যখন মার্বেল আকারের হয়, তখন বৃষ্টি না হলে মাসে একবার সেচ দিতে হয়। অপর আমচাষি মোক্তার আলি বলেন, এখনও পর্যন্ত যে আবহাওয়া দেখা যাচ্ছে, তাতে আমের ফলন ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।


     (চলছে আমগাছের পরিচর্যা। নিজস্ব চিত্র)
  • Link to this news (বর্তমান)