নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ভিন রাজ্যে পাচার হওয়া তরুণীকে উদ্ধার করতে গিয়ে এক মহিলা কনস্টেবলকে যৌন হেনস্তা করেন এসআই। অভিযোগ, সেবার কাজ হাসিল না হওয়ায় থানার মধ্যেই তাঁকে ফের ধর্ষণের চেষ্টা করেন ওই এসআই। বারাসত থানার এই ঘটনায় বিচারের দাবিতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই মহিলা কনস্টেবল।
মামলাকারী ওই মহিলা কনস্টেবলের অভিযোগ, ২০১৯ সালে তিনি বারাসত থানায় কর্মরত ছিলেন। সেসময় পাচার হওয়া তরুণীকে উদ্ধার করতে পুনেতে যায় বারাসত থানার একটি দল। সেই দলে ওই মহিলা কনস্টেবলের সঙ্গে ছিলেন এসআই প্রভাতকুমার বিশ্বাস। কনস্টেবলের অভিযোগ, পুনেতে গিয়ে তাঁকে এক ঘরে রাত কাটানো ও শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দেন ওই এসআই। প্রস্তাবে তিনি রাজি না হওয়ায় ওই এসআই হোটেলের দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকার চেষ্টা করেন ও তাঁকে যৌন হেনস্তা করেন। ফিরে আসার পর গোটা ঘটনার কথা বারাসত থানার তৎকালীন আইসিকে জানালে তাঁকে বিষয়টি চেপে যাওয়ার পরামর্শ দেন আইসি। সেই মতো তখন তিনি চুপ করে থাকেন বলে দাবি ওই কনস্টেবলের।
এরপর ২০২২ সালে সেকেন্ড অফিসার হিসেবে প্রভাতের পদোন্নতি হয়। মামলাকারীর অভিযোগ, তারপর থেকে অত্যাচারের মাত্রা চরম আকার নেয়। প্রায় রাতেই রেস্ট রুমে এসে নোংরা টিকাটিপ্পনি ছিল তাঁর নিত্যদিনের ব্যাপার। নাইট ডিউটি এড়াতে ও পদোন্নতি পেতে গেলে তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে হবে বলে প্রভাত হুমকি দেয় বলেও অভিযোগ। এরপর ২০২৩ সালের ২৭ আগস্ট সেন্ট্রি ডিউটি করার সময় থানার মধ্যেই ওই এসআই তাঁকে রাতে ধর্ষণের চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ তাঁর। চিৎকার করায় কোনওক্রমে তিনি প্রাণে বাঁচেন। এরপর উচ্চপদস্থ কর্তাদের অভিযোগ জানানোর পর ওই এসআইকে হাবড়া থানায় বদলি করে দেওয়া হয়।
মামলায় আরও অভিযোগ, গত লোকসভা ভোটের সময় মামলাকারীর বদলি হয় মধ্যমগ্রাম থানায়। সেসময় প্রভাত দোলতলা পুলিস লাইনে রুটিন বদলি হয়ে আসেন। অভিযোগ, এরপর প্রভাব খাটিয়ে মধ্যমগ্রাম থানার দুই অফিসারকে প্রভাত মামলাকারীর বিরুদ্ধে উস্কানি দেয় বলে অভিযোগ। বারাসত পুলিস জেলার সুপারকে গোটা ঘটনা লিখিতভাবে জানালেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
সম্প্রতি বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যর এজলাসে মামলাটি শুনানির জন্য উঠলে রাজ্যের তরফে জানানো হয় ওই কনস্টেবলকে ইতিমধ্যেই গোবরডাঙা থানায় বদলি করা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করছে ইন্টারনাল কমপ্লেন্টস কমিটি। সব শোনার পর বিচারপতি ভট্টাচার্য ডিসেম্বর মাসের মধ্যে তদন্ত শেষের নির্দেশ দিয়েছেন।