• জঙ্গি ট্রানজিট ক্যাম্প সুন্দরবনে, কাশ্মীর পুলিসের সতর্কবার্তা রাজ্যকে
    বর্তমান | ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বাংলাদেশ লাগোয়া সুন্দরবনের বিভিন্ন অংশে ‘ট্রানজিট ক্যাম্প’ তৈরি কাজ শুরু করেছে জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তোইবা। উদ্দেশ্য সুন্দরবনে জলপথে কোস্টাল পুলিস এবং বিএসএফের নজর এড়িয়ে, অপেক্ষাকৃত ‘অরক্ষিত’ অংশ ব্যবহার করে দ্রুত যাতে পৌঁছে যাওয়া যায় রাজশাহী, খুলনা বা বাগেরহাটে। ক্যানিংয়ের হসপিটাল মোড়ের একটি বাড়ি থেকে ধৃত কাশ্মীরি জঙ্গি জাভেদ মুন্সিকে জেরা করে  এই তথ্য পেয়েছে জম্মু-কাশ্মীর পুলিস। বিষয়টি জানার পরই উপত্যকার পুলিস সতর্ক করেছে এ রাজ্যের প্রশাসনকে। গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, কাশ্মীরে কড়াকড়ির কারণে বাংলাদেশ থেকে লস্করের পাক হ্যান্ডলাররা ‘হাওলা’র মাধ্যমে এপারের স্লিপার ও লজিস্টিক সেলকে টাকা পাঠাচ্ছে। সেই বিষয়গুলির তদারকি করতেই জাভেদ ক্যানিংয়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে গা-ঢাকা দিয়েছিল। পাশাপাশি নতুন করে কয়েকটি এলাকায় ‘ট্রানজিট ক্যাম্প’ গড়ার পরিকল্পনাও ছিল তার। ‘ওয়ান্টেড’ জাভেদকে নিয়ে কাশ্মীর রওনা হয়েছে শহিদগঞ্জ থানার পুলিস।


    জাভেদকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারীরা জেনেছেন, হাসিনা সরকার পতনের পর লস্করের বেশ কয়েকজন শীর্ষ জঙ্গি এবং পাক হ্যান্ডলাররা ঘাঁটি গেড়েছে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে। বর্তমানে বিভিন্ন তদন্তকারী সংস্থার সতর্ক নজর রয়েছে কাশ্মীরে। যে কারণে পাক–কাশ্মীর সীমান্ত দিয়ে হাওলার কারবার বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এই রুটে অস্ত্র বা জঙ্গি গোষ্ঠীর লোকজনের যাতায়াত অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। পাশাপাশি রাজস্থান ও পাঞ্জাবের পাক সীমান্ত লাগোয়া এলাকা দিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র আনতে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে লস্করকে। সেই কারণে তারা বেছে নিয়েছে বাংলাদেশকে। যাতে সহজেই সীমান্ত পেরিয়ে এপারে ঢুকে যাওয়া যায়। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জের সামশেরনগর, ক্যানিং, বাসন্তী, গোসাবার পাঠানখালি, বসিরহাটের টাকি, পার হাসনাবাদ এলাকাকে বেছে নিয়েছে লস্কর জঙ্গিরা। এখানকার অরক্ষিত নদীপথ ব্যবহার করে অনায়াসে ঢুকে পড়া যায় উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন প্রান্তে। 


    জেরায় কাশ্মীর পুলিসকে জাভেদ জানিয়েছে, সীমান্তের ওপার থেকে আসছে হাওলার মাধ্যমে টাকা আসছে। একইসঙ্গে তদন্তকারীরা জেনেছেন, হাওলা করে  আসা টাকা কাশ্মীরে  পাঠানোর জন্য সীমান্ত সংলগ্ন বেশ কয়েকজন যুবকের মগজধোলাই করে তাদের নামে অ্যাকাউন্ট খোলে জাভেদ। এহেন ১০টি অ্যাকাউন্টের হদিশ মিলেছে।  জাভেদ জেরায় জানিয়েছে, সুন্দরবন লাগোয়া জলপথ পেরিয়ে এর আগেও বাংলাদেশে গিয়েছে। দেখা করেছে লস্করের মাথাদের সঙ্গে।  তার শ্যালক তথা ক্যানিংয়ের শাল ব্যবসায়ীর অ্যাকাউন্টে কী ধরনের লেনদেন হয়েছে, তা জানতে তথ্য বিশ্লেষণ করছেন তদন্তকারীরা।   
  • Link to this news (বর্তমান)