সংবাদদাতা, বিষ্ণুপুর: ‘কেন্দ্র সরকারের শোষণ, বঞ্চনা ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে নিজেদের কণ্ঠস্বর জোরালো করতে আপনারা আমার সহযোদ্ধা হয়ে দিল্লিতে হকের পাওনা আদায় করতে গিয়েছিলেন। তার জন্য আমি ধন্য এবং কৃতজ্ঞ। কিন্তু মাটির দেওয়াল ভেঙে সন্তান হারালেও কেন্দ্র কোনও আবেদন কানে নেয়নি। কিন্তু আজও আমার হৃদয় কাঁদে। এবং আজীবন এই দুঃখ ভোলার নয়। আপনাদের দুঃসময়েও আমাদের লড়াইয়ে যেভাবে পাশে থেকেছেন, তা বাংলার আগামী প্রজন্মের কাছে চিরস্মরনীয় হয়ে থাকবে’। তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাঠানো এমনই শুভেচ্ছাবার্তা পেয়ে বিষ্ণুপুরের বড়ামারা গ্রামের সন্তানহারা তিন পরিবারের সদস্যদের চোখে জল। মঙ্গলবার বাঁকুড়া জেলা সভাধিপতি অনুসুয়া রায়, তৃণমূল কংগ্রেসের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিক্রমজিৎ চট্টোপাধ্যায়, বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষ সহ অন্যান্য নেতৃত্বরা বড়ামারা গ্রামে যান। এবং সন্তানহারা তিনটি পরিবারের সদস্যদের হাতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাঠানো শুভেচ্ছাবার্তা তুলে দেন।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর বার্তায় এও লিখেছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র বঞ্চনা, লাঞ্ছনা, অত্যাচার আজ সমগ্র দেশবাসীর কাছে এক অসহ্য যন্ত্রণার। কিন্তু বাংলার মানুষের উপর বিজেপির এই রোষ, রাগ যেন সবথেকে বেশি। আবাস যোজনার তালিকায় নাম থাকা সত্বেও পাকা বাড়ি না পাওয়ায় মাটির দেওয়াল ভেঙে তিন তিনটি তরতাজা শিশু প্রাণ হারিয়েছে। তারপরেও ঘৃণ্য বিজেপি সরকার কোনও আবেদন কানে নেয়নি। রাজ্য সরকারের বাংলার বাড়ি প্রকল্পে আপনারা তালিকাভুক্ত হয়েছেন জেনে একটু হলেও কষ্টটা লাঘব হল। মা মাটি মানুষের সরকার সর্বদা আপনাদের কল্যাণার্থে নিয়োজিত। আমি আপনাদের পরিবারের সকলের মঙ্গল কামনা করছি।
দলের জেলা সভাপতি বিক্রমজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে সদ্য সন্তান হারানো ব্যথা বুকে বয়ে আমাদের দলের সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহযোদ্ধা হয়ে যেভাবে দিল্লিতে আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন, তা নজিরবিহীন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সেকথা ভোলেননি। বাংলার বাড়ি প্রকল্পে প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়ার পাশাপাশি তিনি নিজে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছেন। তাঁর নির্দেশেই আমরা এদিন বড়ামারা গ্রামে তিন পরিবারের হাতে তা তুলে দিয়েছি।
২০২৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সকালে মাটির বাড়ির পাশে খেলা করার জন্য দেওয়াল ভেঙে বড়ামারা গ্রামের তিনটি পৃথক পরিবারের তিনজন শিশুর মৃত্যু হয়। তাঁদের মধ্যে প্রশান্ত সর্দার ও জয়দেব সর্দার বলেন, আমাদের সন্তানদের আর ফিরে পাব না। কিন্তু দুর্ঘটনার পর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ তৃণমূল নেতা-নেত্রীরা যেভাবে আমাদের পাশে সবসময় থেকেছেন, তাতে মানসিকভাবে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছি। সেজন্য আমরা তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ। কদিন আগেই বাড়ির টাকা পেয়েছি। এদিন স্বয়ং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় চিঠি পাঠিয়েছেন।