এই সময়, বালি: দলের নানা অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে দু’জনকে এক মঞ্চে বা একই সময়ে দেখা যায়নি। এমনকী দলের ডাকে রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও একসঙ্গে দু’জনকে দেখা যায়নি। দু’জনেই আলাদা করে কর্মসূচি করেছেন।
এ বার বাবাসাহেব আম্বেদকরকে নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের অবমাননার মন্তব্যের প্রতিবাদে দলীয় কর্মসূচিতে বিধায়কের অংশ না নেওয়াকে কেন্দ্র করে বিরোধ আরও প্রকাশ্যে এল। হাওড়ার বালিতে তৃণমূলের অন্দরে জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি কৈলাস মিশ্র ও বিধায়ক রানা চট্টোপাধ্যায়ের মতবিরোধ প্রায় এক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে।
সোমবার রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের প্রতিবাদ মিছিল ছিল। বালির ব্লকস্তরের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি ছিল বেলুড়ের রঙ্গোলি মলের সামনে। সেখানে কৈলাস–সহ দলের ব্লক সভাপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ও অধিকাংশ নেতারা হাজির থাকলেও ছিলেন না বিধায়ক রানা। তিনি বালি বিধানসভা এলাকার লিলুয়ায় একই ইস্যুতে আলাদা একটি কর্মসূচিতে অংশ নেন বলে জানা গিয়েছে।
বিধায়কের অনুপস্থিতি নিয়ে কৈলাস বলেন, ‘আমি বলতে পারব না। আমি ওনার পিএ নয়। উনি কেন আসেননি ওঁনাকেই জিজ্ঞেস করুন।’ পরে লিলুয়ার কর্মসূচিতে অংশ নেন রানা। সেখান রানা বলেন, ‘আমি মনে করি না এটা কোনও ভদ্র ভাষা। এই ধরণের কথা বলাটা শালীন আচরণ বলেও মনে করি না। আম্বেদকরের অবমাননার প্রতিবাদে তৃণমূলের অসংখ্য বিক্ষোভ, প্রতিবাদ মিছিল হচ্ছে সব জায়গায়। আমিও এখানে প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নিয়েছি।’
বালির তৃণমূল ব্লক সভাপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এদিন বেলুড়ের গিরিশ ঘোষ রোডে রঙ্গোলি মলের সামনে প্রতিবাদ সভার কর্মসূচী নেন। পরে সেখান থেকে বেলুড় বাজার পর্যন্ত একটি প্রতিবাদ মিছিলও হয়। সেই মিছিলে হাওড়া জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি কৈলাস মিশ্র নেতৃত্ব দেন। দলীয় ওই কর্মসূচীতে বালির অধিকাংশ দলীয় নেতা কর্মী, প্রাক্তন কাউন্সিলররা অংশ নেন।
কিন্তু কর্মসূচীতে ছিলেন না বালির বিধায়ক রানা চট্টোপাধ্যায়। এর আগেও গত প্রায় এক বছর জেলা যুব সভাপতির উপস্থিতিতে বহু কর্মসূচীতে বিধায়ককে দেখা যায় নি। দুই নেতার দন্দ্ব এই মুহুর্তে বালির তৃণমূল মহলে রীতিমতো চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে। জেলা যুব সভাপতি ও বিধায়কের বিরোধে বালির তৃণমূল কংগ্রেস আড়াআড়ি ভাবে ভাগ হয়ে গেছে বলে দলীয় কর্মীরাই বুঝছেন।
এদিন এ নিয়েই জেলা যুব সভাপতিকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তখনই তিনি বিধায়কের উদ্দেশে ওই মন্তব্য করেন। কৈলাস বলেন, 'বালি আমার নিজের বাড়ি। ব্লক সভাপতির নির্দেশ মেনে দলীয় কর্মসূচীতে যোগ দিয়েছি। দলের সব নেতা, কাউন্সিলর, কর্মী সবাই আছেন কর্মসূচীতে।' এ বিষয়ে তিনি উচ্চতর মহলে তিনি অভিযোগ জানাবেন বলেও সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
এদিকে রানা বলেন, 'বি আর আম্বেদকরের অবমননা নিয়ে প্রতিবাদে তৃণমূল কংগ্রেস পথে নেমেছে। এ নিয়ে একাধিক মিছিল হবে। সবাই প্রতিবাদ করবেন। এটাই স্বাভাবিক। তা নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। পথে আমরাই তিনশো পঁইয়ষট্টি দিন থাকি।'