• হুগলীর ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার নদিয়ার শান্তিপুরে, তিন দিন ধরে ছিলেন নিখোঁজ...
    আজকাল | ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
  • মিল্টন সেন: হুগলির নিখোঁজ ব্যবসায়ীর রহস্য মৃত্যু। তিন দিন পর ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হল নদিয়ার শান্তিপুর থেকে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হুগলির বলাগড়ে। শোকের ছায়া মৃতের পরিবারে। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

    পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত ব্যবসায়ীর নাম সমর দাস (৪০)। বাড়ি হুগলি জেলার বলাগড় থানার অন্তর্গত গুপ্তিপাড়ার বাঁধাগাছি এলাকায়। সমর কাপড়ের উপর ডিজাইন করা এপ্লিকের পাশাপাশি কাঠের ব্যবসা চালাতেন। গত ২৩ ডিসেম্বর সকালে ব্যবসার কাজে শান্তিপুর গিয়েছিলেন। বেলার দিকে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন বাড়ির সদস্যরা। কিন্তু কোনওভাবেই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। তারপরেই পরিবারের লোকেরা নিঁখোজ ডায়েরি করেন বলাগড় থানায়। অবশেষে শুক্রবার দুপুরে শান্তিপুরের গঙ্গার ঘাট সংলগ্ন জঙ্গল থেকে সমরের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। পরিবারের দাবি, সমরের গলায় সোনার চেন এবং হাতে সোনার আংটি ছিল। যা পাওয়া যায়নি। মোবাইলের সিম কার্ডও পাওয়া যায়নি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সরস্বতী পুজোয় বাচ্চা মেয়েরা যে বাসন্তী রঙের লালপাড় শাড়ি পড়ে, সমরের সেই শাড়িতে লালপাড় বসানোর লেজার যন্ত্র রয়েছে গুপ্তিপাড়ায়। অতি সম্প্রতি এক ব্যবসায়ী ওই যন্ত্র শান্তিপুরে বসান। ফলে শান্তিপুরের ক্রেতারা আর তাঁর কাছে আসতেন না। তাঁরা শান্তিপুর থেকেই ওই কাপড় কিনতে শুরু করেছিলেন। তাই শান্তিপুরের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনার জন্য গত বুধবার সমর শান্তিপুরে গিয়েছিলেন। প্রয়োজনে শান্তিপুরের থেকে কম দামে নাকি শাড়ি সরবরাহ করতেও প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু আর ঘরে ফেরা হল না তাঁর।

    সমরের পরিবারে তাঁর বৃদ্ধ বাবা, মা, স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। কান্নায় ভেঙে পড়েছে গোটা পরিবার। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ব্যবসায়ী মৃত্যুর এই রহস্য উদঘাটন হোক। সমরের ভাই অভিজিৎ দাস জানিয়েছেন, এটি কোনও ভাবেই আত্মহত্যা নয়। কয়েকটা বিষয়ে খটকা লাগছে। দাদা যদি আত্মহত্যা করবেন, তাহলে নদিয়ায় যাবেন কেন? নিখোঁজ হওয়ার দিন তারাপুর বাজার থেকে এক খদ্দেরের বাইকে চেপে অন্য এক জায়গায় গিয়েছিলেন। সেখান থেকে তারাপুর ঘাটে ফিরে এসেছিলেন। সেখানকার পুরনো ফেরিঘাটের পাশ থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ এ দিন উদ্ধার হয়। কেউ দেখল না? গলায় সোনার চেন, আংটি ছিল। সেগুলি কোথায় গেল? মোবাইলের সিম নেই কেন? এমনই একাধিক প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে। 

    এই প্রসঙ্গে হুগলি গ্রামীন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সরকার জানিয়েছেন, একটা নিখোঁজ ডায়রি হয়েছিল। বলাগড় থানার পুলিশ পরিবারের লোক নিয়ে নদিয়াতে গিয়েও খোঁজ খবর নেন। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গিয়েছে, স্থানীয় একজনের সঙ্গে খাওয়া দাওয়া করেছিলেন, তারপর আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই মৃত্যুর কারণ বোঝা যাবে। তদন্ত চলছে।
  • Link to this news (আজকাল)