• এমনও সম্ভব! পঞ্চাশ বছর বয়সে অন্ধ, ২০ বছর পর ফিরে পেলেন দৃষ্টিশক্তি
    ২৪ ঘন্টা | ০৫ জানুয়ারি ২০২৫
  • অরূপ বসাক: আশ্চর্যজনক ঘটনা। জলপাইগুড়ির ওদলাবাড়ি দেবী পাড়ার ফারুক খান ৫০ বছর বয়সে দৃষ্টিহীন হয়ে পড়েন। এখন ফারুকের বয়স ৭০। দীর্ঘ ২০ বছর পর ফের দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেয়েছেন তিনি। বাবা দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাওয়ায় খুশিতে আত্মহারা ফারুকের ছেলেমেয়েরা। 

    ফারুক খানের ৪ সন্তান এবং স্ত্রী রয়েছেন। যখন তাঁর চোখের দৃষ্টি সম্পূর্ণ চলে যায় সেই সময়ে তাঁর পারিবারের এবং নিজের মানসিক অবস্থা কেমন ছিল? এনিয়ে ফারুক খানের বড় ছেলে ফিরোজ খান বলেন, আজ থেকে ২০ বছর আগে যখন আমরা স্কুলে পড়াশোনা করতাম তখন হঠাৎ বাবার দৃষ্টিশক্তি কমতে থাকে। সেই সময় বাবা এক ঠিকেদারের কাছে কাজ করতেন। কাজ করে যা রোজগার হতো তাতেই আমাদের সংসার চলত। কিন্তু দৃষ্টিশক্তি কমতে কমতে বাবা একেবারেই অন্ধ হয়ে যান। সেই সময় রুজি রোজগার বন্ধ হয়ে যায় আমাদের। যেহেতু আমি পরিবারের মধ্যে সবচেয়ে বড় তাই আমাকে পড়াশুনা ছেড়ে সংসারের হাল ধরতে হয়। সংসারের হাল ধরতে সেই সময় পড়াশোনা ছেড়ে কাজে নেমে পড়ি। বিভিন্ন ঠিকাদার অধীনে কাজ করতাম। তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল বাবাকে নিয়ে। তাঁর চোখের অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে হাঁটাচলা করতে পর্যন্ত পারতেন না। যেকোনো জায়গায় যেতে হলে একজন সঙ্গী লাগত। আমি অথবা ভাইরা হাত ধরে বিভিন্ন জায়গায় বাবাকে নিয়ে যেতাম। 

    ফিরোজ আরও বলেন, বাবার চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করেও কোন লাভ হয়নি। এমনকি ভিনরাজ্যে গিয়ে নামী ডাক্তার দেখিয়ে চোখ ঠিক হয়নি। আমরা আশাই ছেড়ে দিয়েছিলাম। ভেবে নিয়েছিলাম বাবা আর কোনওদিন চোখে দেখতে পাবে না। ৫০ বছর বয়সে বাবা দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছিলেন। শেষমেষ গত বছর বাবাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাই নেপালে। নেপালি সরকারি হাসপাতালে বাবার চোখের চিকিৎসা হয়। তিন মাস ধরে বাবার চিকিৎসা হয় নেপালের সরকারি হাসপাতালে। তিন মাস চিকিৎসার পর দেখা যায় বাবা আবার আগের মত দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেয়েছেন। আর এতেই আমরা অবাক হয়ে যাই। তিনি বলেন সবকিছুই উপরওয়ালার হাতে। তাঁর জন্যই আজ আমার বাবা পৃথিবীকে ফের দেখতে পাচ্ছে।

    সত্তর বছরের ফারুক খান বলেন, ভেবেছিলাম যেকটা দিন বাঁচবো অন্ধ হয়েই থাকতে হবে কিন্তু ওপরওয়ালা আমার চোখের দৃষ্টি ফিরিয়ে দিয়েছেন। এখন আমি নিজের কাজ নিজেই করতে পারি। লেখালেখি, পেপার পড়া সব করতে পারি।  কোন অসুবিধা হয় না। তবে সত্যি এটা আশ্চর্য ঘটনা। কোনদিনই ভাবতে পারিনি আবার চোখে দেখতে পাব।

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)