• কেপিসি মেডিক্যালে ১৫ কোটি টাকা তছরুপ, হাসপাতালের প্রাক্তন কর্ত্রীর আত্মীয় ধৃত
    বর্তমান | ০৫ জানুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বেসরকারি কেপিসি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়নের নামে প্রায় ১৫ কোটি টাকা তহবিল তছরূপ! এই তছরুপে জড়িত থাকার অভিযোগে শুক্রবার বিকেলে এক ঠিকাদারকে গ্রেপ্তার করলেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। ধৃতের নাম রাজীব ঘোষ।  এই ব্যক্তি হাসপাতালের প্রাক্তন এক পদস্থ কর্ত্রীর  আত্মীয়। ধৃতের কাছ থেকে একাধিক জালনথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বছর পঁয়তাল্লিশের রাজীবের বাড়ি  কড়েয়া থানা এলাকার ৬ নম্বর তারক দত্ত লেনে। কলকাতা পুলিসের ভারপ্রাপ্ত গোয়েন্দা প্রধান রূপেশ কুমার এই খবর জানিয়েছেন। কলকাতা পুলিসের এক সূত্র জানাচ্ছে, কেপিসি মেডিক্যাল কলেজে কর্তৃপক্ষের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমেছিল যাদবপুর থানার পুলিস। গত বছর জুন মাসের শেষ দিকে যাদবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিল কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ গুরুতর হওয়ায় এই মামলার তদন্তভার তুলে দেওয়া হয়, লালবাজারের প্রতারণা দমন শাখার গোয়েন্দাদের হাতে। 

    প্রাথমিক তদন্তে লালবাজারের গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ধৃত রাজীব ঘোষের এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয়া কেপিসি মেডিক্যাল কলেজে প্রভাবশালী পদাধিকারী  হিসেবে কর্মরত ছিলেন। যার সূত্র ধরেই দীর্ঘদিন ধরে এই কেপিসি কলেজে আনাগোনা ছিল রাজীবের। গোয়েন্দাদের দাবি, এই কেপিসি মেডিক্যাল কলেজের পরিকাঠামো উন্নয়নের নামে একাধিক জাল নথিপত্র তৈরি করে রাজীব হাসপাতালের প্রায় ১৫ কোটি টাকা নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরিয়েছে।

    গত বছর কেপিসি মেডিক্যাল কলেজের অডিটে আর্থিক তছরুপের এই বিষয়টি সামনে আসে।  তারপরই তড়িঘড়ি ওই প্রভাবশালী কর্ত্রীকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি স্থানীয় যাদবপুর থানায় ঠিকাদার রাজীব ঘোষের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। যার ভিত্তিতে যাদবপুর থানা  প্রতারণা, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, জালিয়াতি, অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গের মতো একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করে। এই মামলার তদন্ত করছিলেন লালবাজারের প্রতারণা দমন শাখার গোয়েন্দারা। তদন্তের ভিত্তিতে গোয়েন্দাদের দাবি, কাগজে কলমে হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়নের কথা বলা হলেও, বাস্তবে সেই কাজ হয়নি। অথচ,  একাধিক জাল নথি তৈরি করে দিনের পর দিন অল্প অল্প করে এই বিপুল পরিমাণ টাকা নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরিয়েছে রাজীব। এরপরই তাঁকে গ্রেপ্তার করে লালবাজার। তবে এই মামলায় কেপিসি হাসপাতাল থেকে অপসারিত সেই প্রভাবশালী কর্ত্রীর ভূমিকাও গোয়েন্দাদের ‘স্ক্যানারে’ রয়েছে।  ধৃত রাজীবকে শনিবার দুপুরে আলিপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত পুলিস হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তছরূপের এই চক্রে আর কারা কারা যুক্ত, তা জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা। 
  • Link to this news (বর্তমান)