রাস্তার পাশে জমিতে পড়ে রয়েছে এক যুবতীর মৃতদেহ। পাশে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় রয়েছেন আর এক যুবক। মঙ্গলবার রাতে এই দৃশ্য দেখে চমকে ওঠেন মহম্মদ বাজার থানা এলাকার সালুকা গ্রামের বাসিন্দারা। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। পরে জানা যায়, সম্পর্কে তাঁরা স্বামী, স্ত্রী। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃতার নাম সুচিত্রা বাগদি(২০) ও তাঁর স্বামী বছর ২২-এর সন্দীপ দাস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। বীরভূম জেলার পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘ঘটনার তদন্ত চলছে।’
ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময়ে স্বামী-স্ত্রীর এই অবস্থায় দেখে স্থানীয় কয়েক জন খবর দেন থানায়। তার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ওই যুবতীর দেহ উদ্ধার করে এবং স্বামীকে ভর্তি করে সিউড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পড়ে থাকা স্বামী পরে দাবি করেন, ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়ায় দুষ্কৃতীরা তাঁর স্ত্রীকে খুন করেছেন। তবে মৃতার পরিবারের দাবি, স্বামীই চক্রান্ত করে খুন করিয়ে ছিনতাইয়ের নাটক করছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় আলাপের পর মহম্মদবাজারের হিংলো গ্রামের বাসিন্দা সন্দীপের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে সুচিত্রার। তার পর তাঁদের মধ্যে ঝামেলাও হয়েছিল। এর পর থানার মধ্যস্থতায়, দুই পরিবারের উপস্থিতিতে মাস ছয়েক আগে মন্দিরে তাঁদের বিয়ে হয়। দিন চারেক আগে স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলেন সন্দীপ। মঙ্গলবার রাতে সেখান থেকেই বাইকে করে নিজের বাড়ি ফিরছিলেন। তখনই ভালুকা গ্রামের কাছে এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে।
সন্দীপের দাবি, বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতী বাইক ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। তাঁর হাত-পা বেঁধে দেয়। তাঁর স্ত্রী বাধা দিতে গেলে তাঁকে খুন করে। যদিও সুচিত্রার পরিবারের লোকেদের অভিযোগ, তাঁদের মেয়েকে পরিকল্পনা করে খুন করেছে সন্দীপ। তার পর নিজের হাত-পা বেঁধে ছিনতাইয়ের গল্প সাজাচ্ছে। ঘটনার প্রকৃত তদন্ত করে দোষীদের চরম শাস্তির দাবি করেছেন তাঁরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, সুচিত্রার গলার হার, কানের দুল সবই অক্ষত রয়েছে। এমনকী সুচিত্রা ও সন্দীপের মোবাইল ফোনও ছিল ঘটনাস্থলেই। ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্য থাকলে কেন সেগুলি দুষ্কৃতীরা নেবে না, সে প্রশ্ন ভাবাচ্ছে পুলিশকে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরেই বোঝা যাবে ঠিক কী ভাবে মৃত্যু হয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’