আদ্রায় উচ্ছেদ অভিযানে এসে বিক্ষোভের মুখে রেল অফিসাররা
বর্তমান | ১২ জানুয়ারি ২০২৫
সংবাদদাতা, রঘুনাথপুর: শনিবার আদ্রায় উচ্ছেদ অভিযানে এসে বিক্ষোভের মুখে পড়েন রেলের আধিকারিকরা। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়ে তৃণমূল এদিন উচ্ছেদ অভিযানে বাধা দেয়। তাতে পিছু হটে রেল কর্তৃপক্ষ। তবে রেলের এই উচ্ছেদের সিদ্ধান্তে ঘুম ছুটেছে প্রায় দেড় হাজার ব্যবসায়ী। তাঁরা পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছেন।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, আদ্রার রেলের জায়গায় থাকা দোকানপাট সরিয়ে ফেলার জন্য ব্যবসায়ীদের নোটিস দেওয়া হয়। কিন্তু, তারপরেও ব্যবসায়ীরা নিজেদের দোকান সরাননি। তাই শনিবার রেলের আধিকারিকরা আরপিএফকে সঙ্গে নিয়ে উচ্ছেদ অভিযানে নামেন। নিয়ে আসা হয় জেসিবি। কিন্তু, তৃণমূলের কর্মী, সমর্থক ও ব্যবসায়ীরা বিক্ষোভ দেখান। তার জেরে রেল পিছু হটতে বাধ্য হয়। আদ্রা ডিভিশনের ডিআরএম সুমিত নারুলা বলেন, অমৃত ভারত প্রকল্পে আদ্রা রেলস্টেশনের আধুনিকীকরণের কাজ চলছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় রাজ্য প্রশাসন আমাদের সহযোগিতা করছে না। তার জেরে আমরা আদ্রা রেল স্টেশনের আধুনিকীকরণের কাজ করতে পারছি না। ব্যবসায়ীদের একাধিকবার নোটিস দেওয়া হলেও তাঁরা দোকান সরাননি। তবে আমাদের উচ্ছেদের কার্যক্রম জারি থাকবে। আমরা যাতে রাজ্য প্রশাসনের সহযোগিতা পাই তার জন্য বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রেলের তরফে ব্যবসায়ীদের দোকানগুলি সরিয়ে নেওয়ার জন্য একাধিকবার নোটিস করা হয়েছিল। গত সপ্তাহে পুনরায় নোটিস সাঁটানো হয়। তাতে জানানো হয়েছিল আগামী ১০ জানুয়ারির মধ্যে রেলের জায়গায় থাকা সমস্ত দোকান সরিয়ে ফেলতে হবে। তাতেই ঘুম ছোটে ব্যবসায়ীদের। ব্যবসা বন্ধ হলে তাঁরা পরিবারের মুখে কীভাবে দু’মুঠো অন্ন তুলে দেবেন, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তাই তাঁরা দোকানগুলি সরাননি। রেল পুনর্বাসন না দিলে তাঁরা দোকান সরাবেন না বলে সিদ্ধান্ত নেন। ব্যবসায়ীদের এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে তৃণমূল। তাই এদিন রেল আধিকারিকরা উচ্ছেদ অভিযানে এলে তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। বিক্ষোভে শামিল ব্যবসায়ী সঞ্জু আনসারী, ভুবন রায়, উজ্জ্বল দাস বলেন, রেল আগে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করুক। আমাদের উচ্ছেদ করা হলে কোথায় যাব? পরিবার নিয়ে পথে বসতে হবে। তাই রেলের কাছে আমরা দাবি রেখেছি যাতে আমাদের কথা ভাবা হয়। তৃণমূলের আদ্রা শহর সভাপতি রাজা চৌবে, রঘুনাথপুর-১ ব্লক আইএনটিটিইউসির সভাপতি তথা আড়রা পঞ্চায়েতের প্রধান তুফান রায় এদিন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আন্দোলনে শামিল হন। তুফানবাবু বলেন, আমরা উন্নয়নের কাজের বিরুদ্ধে নয়। কিন্তু, দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করে আসা ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করা হলে তারা কোথায় যাবে? তাই আমরা উচ্ছেদের বিরুদ্ধে। রেলকে অবশ্যই ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। জেলাশাসক রজত নন্দা বলেন, রেলের নিজস্ব জায়গা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে রেল নিজের কাজ করবে।